নাচোলে জমি সংক্রান্ত বিরোধে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অহত ৮

নাচোল প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু-গ্রুরুপে সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্য ৫ জনের অবস্থা আশংকা জনক।আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় নাচোল উপজেলার সূর্য্যপুর গ্রামে জমিতে আমগাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে সুর্যপুর গ্রামের মৃত শওকত আলীর ছেলে একরামুল হক ও মাজেদ আলীর ছেলে আব্বাস আলী গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন সুর্য্যপুর গ্রামের মৃত হুসেন আলীর ছেলে বাইনুদ্দীন (৪৫),তার স্ত্রী মালেকা (৪৩), মনসুর আলীর স্ত্রী মরিয়ম (৩০) মাজেদ আলীর ছেলে আব্বাস আলী (৫০) ও জসিম উদ্দীনের ছেলে আনারুল (২৬) এবং অপর পক্ষের আহতরা হলেন, একরামুল হকের ছেলে জোবাইদুল হক (২৫) ও এমদাদুল হক (২২) এবং মুটুর ছেলে মাজহারুল (২০) ।

এদরে মধ্যে বাইনুদ্দী, মরিয়ম এবং জোবাইদুল হক,এমদাদুল হক, এবং মাজহারুল এর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একরামুল হক তার লোকদের নিয়ে বিরোধকৃত জমির দক্ষিণ সীমানাতে আমগাছ লাগাতে যায়। এসময় আব্বাস আলী, মুনসুরের স্ত্রী মরিয়ম ও বাইনুদ্দীন আমগাছ লাগাতে বাধা দেন। এসময় দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আব্বাস আলী গ্রুপের ৫ জন ও একরামুল হকের গ্রুপের ৩ জন আহত হয়। আহতদের প্রথমে নাচোল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে ৫ জনের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাদেরকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.সেলিম রেজা ঘটনার শত্যতা নিশ্চিৎ করে জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়ে উভয় পক্ষ এজাহার দাখিল করেছেন। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে, তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাছ লাগাতে বাধা উপেক্ষা করে একপর্যায়ে একরামুল হকের নির্দেশে মারামারি শুরু হয়। মারামারিতে দাতা আব্বাস আলী, জসিমুদ্দিনের ছেলে আনারুল হক, মৃত হুসেন আলীর ছেলে বাইনুদ্দিন ও তার স্ত্রী মালেকা বেগমকে একরামুলের ছেলে ও তাদের লোকজন কোদাল, শাবল, হাসুয়া, বাঁশের লাদনার আঘাতে মারাত্মক জখম করে। মারামারিতে মুনসুরের স্ত্রী মরিয়ম এর মাথা কোদালের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। মরিয়ম ও বাইনুদ্দিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকে রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে একরামুর হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দাতারা তার সাথে পতারনা করেছে। তারা কাঁচা রাস্তা সংলগ্ন দাগের দক্ষিণ অংশ দেখিয়ে আমাকে রেজিস্ট্রি দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু চালাকি করে দাগের উত্তর দিক লিখে দিয়েছে। নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান এব্যাপারে আহতদের পক্ষ থেকে ৮জন বিবাদী সম্বলিত একটি অভিযোগ পেয়েছি।

নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা ও স্থানীয়রা জানান, সূর্যপুর গ্রামের ছেলে একরামুল হক উপজেলার নাচোল ইউপির সূর্যপুর মৌজার হাল ২০ ও ২২দাগে মোট ৪০শতাংশ জমি একই গ্রামের মাজেদ আলীর স্ত্রী চেনবানু ও তার ছেলে আব্বাস আলীর নিকট থেকে কয়েক বছর পূর্বে ক্রয় করেন। ক্রেতা একরামুর হক দাতাদের নিকট থেকে জমির দক্ষিনে হাঁকরইল-সূর্যপুর কাঁচা সড়কের পাশে অর্থাৎ ২০দাগের জমি রাস্তা সংলগ্ন দাবী করে আসছিলেন।

এনিয়ে নাচোল থানায় একরামুল হক দাতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে অভিযোগটি নাচোল থানায় নিষ্পোত্তির লক্ষ্যে উভয়পক্ষের আইনজীবি ও গন্যমান্য লোকদের নিয়ে বসেন।

ওই বৈঠকের একজন শালিসদার নাচোল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কাবুল হোসেন ও আহত বাইনুদ্দীন জানান, একরামুল হকের দলিলের সীমানা চৌহদ্দি ২০ ও ২২দাগের উত্তর দিক উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু একরামুল হক তার দলিলের চৌহদ্দি মানতে চান না। এ নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত।