নগরীতে ভাইয়ের বাড়িতে ভাইয়ের হামলা ও ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীতে নাজমুল ইসলাম খোকন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তারই দুই ভাই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নাজমুল বলছেন, হামলার সময় পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশের সামনেই ভাঙচুর চালানো হয়। আর গুদাম ভেঙে লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় তার প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল।

নাজমুল ইসলাম খোকন কাদিরগঞ্জ এলাকার মৃত দীন মোহাম্মদের ছেলে। হামলা, ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাটের ঘটনায় তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জমি সংক্রান্ত জটিলতার জের ধরে নাজমুলের ছোট ভাই রবিউল আউয়াল কচি ও আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু বহিরাগত প্রায় ৩০ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালান বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে নজরুল ইসলাম খোকন বলেছেন, ১৯৭৫ সালে বাড়ির পাশে তার বাবা দীন মোহাম্মদ সাড়ে ১৩ কাঠা জমি কেনেন। জমিটি তারা তিন ভাই ও তাদের মা আনোয়ার বেগমের নামে লিখে দেন তাদের বাবা। প্রত্যেকের জমির পরিমাণ তিন কাঠা ছয় ছটাক। কিন্তু দলিল করার সময় জমির কোন অংশ কার সেটি উল্লেখ করা হয়নি। এভাবেই জমিটি আছে।
কিন্তুঋণ শোধ না করার কারণে ২০০৪ সালে আশরাফুল ইসলাম বাচ্চুর জমিটুকু নিলাম করে দেয় ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এখন বাচ্চুর জমির মালিক শামিম হায়দার দারা নামের একজন আইনজীবী। তিনি মালিকানা পাবার পর জমির কোন অংশের মালিক কে সেটি ঠিক করতে নাজমুল ইসলাম খোকন ২০০৮ সালে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনও চলছে।

এরই মধ্যে ছোট ভাই রবিউল আউয়াল কচি দাবি করে বসেন, এখন নাজমুল ইসলামের যেখানে বাড়ি রয়েছে সেখানেই তার জমির অংশ রয়েছে। জায়গাটুকু দখলে নিতে সকালে আরেক ভাই বাচ্চুসহ অজ্ঞাত প্রায় ৩০ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে গিয়ে হামলা চালান। তারা নাজমুলের দোতলা বাড়ির সিঁড়ি ভাঙতে শুরু করেন। নাজমুল বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করা হয়। এরপর সিঁড়িটি ভেঙে ফেলা হয়। দোতলা বাড়ির নিচতলায়, সিঁড়ির পাশে থাকা একটি গুদাম ঘরের তালা ভেঙে প্রায় ছয় লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়। পরে গুদামের সামনে রবিউল আউয়াল কচির ছেলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যানার লাগিয়ে দেয়া হয়।

নাজমুল ইসলাম জানান, বাড়িতে শুধু তিনি এবং তার স্ত্রী থাকেন। এমন সন্ত্রাসী হামলার পর তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি বলেন, হামলা চলাকালেই পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশের প্রতিই মারমুখি আচরণ করে হামলাকারীরা। এরপর পুলিশের সামনেই সিঁড়ি ভেঙে ফেলা হয়। গুদাম ভেঙে মালামাল নিয়ে চলে যাওয়া হয়। কান্নায় ভেঙে পড়ে নাজমুল বলেন, পুলিশের সামনেই এমন ঘটনা ঘটলে আমার নিরাপত্তা কে দেবে? আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল আউয়াল কচি বলেন, জমির কোন অংশটি কার সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলে আমি ক্ষতিপূরণও পেয়েছি। লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার নিজের জায়গাটিই দখলে নিয়েছি।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, জমি নিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে ঝামেলা হয়েছে। একটা অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।