ধানের বাম্পার ফললে খুশি ধামইরহাটের কৃষকেরা

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট:

গ্রামের আনাচে-কানাচে মেঠোপথের চারদিকে তাকালেই চোখে পরে মাঠ ভরা ধান। নিঃশ্বাসে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে কৃষকের বুক। শিশির ভেজা ভোরে মৃদুল হাওয়ায় ধান গাছের পাতায় দুলছে কৃষকের সোনালী হাসি। এসময় অনেক স্বপ্ন নিয়ে কৃষক-কৃষাণীরা ব্যস্ত থাকেন ধান কাটার মহোৎসবে।

শস্যক্ষেত নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা। এবছর বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ৩০ হে. ধান উৎপাদন হয়েছে যা প্রতি ১ হে. ৭.২ মেট্রিকটন। করোনায় শ্রমিক সংকটের মাঝেও ধানের বাম্পার ফলনে ভালো দাম পেয়ে কৃষকের হাসিতে দুলছে স্বপ্ন। তবে দালাল আর সিন্ডিকেটের দৌরাত্বের কারনে প্রতি বছরের মত এবারও প্রান্তিক কৃষকরা সরকারী মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারার অভিযোগও রয়েছে ব্যাবস্যায়ীদের বিরুদ্ধে।

কৃষক আবু রাইহান বলেন, এবার বিগাহারিতে ধান পেয়েছি ৩৫-৪০ মন। সবমিলে খরচ পরেছে প্রায় ১২-১৪ হাজার টাকা। বাজারে প্রকার ভেদে কাটারি ভোগ ধানের মুল্য ৮২০-৮৭০ টাকা, জিরা ৯০০ টাকা। এবার ধানের বাম্পার ফলনে ভালো দাম পেলাম তবে সরকারের বেধে দেয়া ১ হাজার ৪০ টাকা দরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হলে কৃষকরা লাভবান হতো।

পৌর ৮ নং ওয়ার্ড জয়জয়পুর গ্রামের কৃষক আবুল বাশার বলেন, প্রথম প্রথম ধানের দাম ভালো থাকে তারপর পাইকারি ব্যবসায়ী দালাল আর সিন্ডিকেটের কারনে শেষ পর্যন্ত লোকসান দিয়ে বাধ্য হয়ে কম দামে কৃষকের ফসল বিক্রি করতে হয়।

পুর্ব বাজার ধান ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, দুদিন আগে ধানের দাম বেশি ছিল। সামনে ঈদ আসায় ধানের দাম একটু কমতে শুরু করেছে। মিলাররা ধান না নেয়ার কারনে অমরাও কিনতে পারছিনা। মিলারদের ধান নেয়া না নেয়ার উপরেই ধানের দাম ওঠা নামা নির্ভর করে। এখানে আমাদের করার কিছুই নেই।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, এবছর বোরো মৌসুমে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সঠিক পরামর্শ প্রদান এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের ঠার্গেট অনুযায়ী এবছর ১৬ হাজার ৩০ হে. ধান উৎপাদন হয়েছে যা প্রতি ১ হে. ৭.২ মেট্রিকটন। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী উপজেলায় মাঠে পরে থাকা ১৬ হাজার ৩০ হে. ধান কৃষক যেন নির্বিঘে কেটে ঘড়ে তুলতে পারে তার জন্য ৭ টি কম্বাইন হারভেষ্টার ও ৯টি রিকভার ধানকাটা মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এতে কৃষক ২ হাজার টাকায় ৪৯ শতক জমির ধান খুব সহজেই কেটে নিতে পারছেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী ১ হাজার ৪০ টাকায় কৃষক যেন ধান ক্রয় করতে পারেন সেজন্য প্রতিটি ইউনিয়নে লটারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছারাও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক আনার ব্যবস্থা করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক এসেছে, তারা করোনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থেকে কৃষকের ধানকাটা শুরু করেছেন।