ঢাকা মেডিকেলে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের’ রোগী

ডা. ফরহাদ উদ্দিন বলেন, খুলনার এই রোগী এক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে তাঁর কিছু উপসর্গ দেখা দেয়—মাথাব্যথা, ডান চোখে সমস্যা, সাইনোসাইটিস এবং মুখের এক পাশে ফুলে যাওয়া এবং নাক দিয়ে ঠিকমতো বাতাস নিতে পারছিলেন না। এগুলো নিয়ে এক সপ্তাহ আগে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তাঁর উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা ফাঙ্গাল ইনফেকশন সন্দেহ করেন।

পরে তাঁর চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির শরীর থেকে ফাঙ্গাস অপসারণ করা হয়। এরপর নমুনার হিস্ট্রোপ্যাথলজি, মাইক্রোস্কপি ও কালচার পরীক্ষা করে তিনটাতেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

ফরহাদ উদ্দিন বলেন, সন্দেহ যেহেতু বেশি ছিল, তাই রিপোর্ট আসার আগেই রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়। ওই ব্যক্তিকে চার থেকে ছয় সপ্তাহ চিকিৎসা নিতে হবে। উনি যে অবস্থায় এসেছিলেন, তার চেয়ে এখন ভালো আছেন।

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল পরিস্থিতির মধ্যে গত মাসে নতুন করে আলোচনায় আসে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। করোনা থেকে সুস্থ হতে শুরু করেছেন অথবা সুস্থ হয়ে গেছেন এমন রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, অর্থাৎ কালো ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দেয়। মিউকরমাইকোসিস নামক এই রোগে আক্রান্ত হয়ে চোখ হারিয়েছেন অনেক রোগী।

ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ব্যাপকভাবে এই রোগ সংক্রমণের জন্য করোনার চিকিৎসায় বেশি মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহারকে দায়ী করছেন। তাঁদের ভাষ্য মতে, কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত ডায়াবেটিস রোগীদের যাঁদের স্টেরয়েড দেওয়া হয়, তাঁদের মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এ ছাড়া আগে থেকে ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও করোনায় দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আরও দুর্বল হওয়ায় এই ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

সূত্র: প্রথম আলো