ডায়রিয়া থেকেও হতে পারে কিডনি বিকল, যেভাবে সতর্ক থাকবেন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

ডায়রিয়া হলে বেশিরভাগ মানুষই ঘরেই চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

অধিকাংশ মানুষই জানেন যে, ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা এড়াতে স্যালাইন খাওয়ার বিকল্প নেই। এর সঙ্গে তরলজাতীয় খাবারও খেতে হয় প্রচুর। তবে ডায়রিয়ার সঙ্গে কিডনি বিকল হওয়া সম্পর্ক কোথায়, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।

আসলে ডায়রিয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। এর থেকেই হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডায়রিয়া থেকে পানিশূন্যতাই আকস্মিক কিডনি বিকলের অন্যতম কারণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা দৈনিক রোদে কাজ করেন ও পর্যাপ্ত পানি পান করেন না তাদের ক্ষেত্রে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎ কিডনি বিকল হতে পারে।’

‘এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার ওষুধ খাওয়া, প্রস্টেট বড় হয়ে যাওয়া, কিডনিতে বেশি পাথর জমা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ ইউরিন ইনফেকশনের কারণে একদিনেই হঠাৎ করে কিডনি বিকল হতে পারে।’

তাই ডায়রিয়া হলেই তাৎক্ষণিক খাবার স্যালাইন খেতে হবে, যাতে পানিশূন্যতা না হয়। অনেক সময় তীব্র ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিকে কারণে আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে।

তাই সবাইকে মনে রাখতে হবে, যখন তখন ব্যথানাশক ওষুধ কিংবা অ্যান্টিবায়েটিক খাওয়া যাবে না। তার আগে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।

কিডনি সমস্যার লক্ষণ কী কী?

এ বিষয়ে ডা. সামাদ বলেন, ‘তলপেটে বা মূত্রনালিতে ব্যথা, ঘুমের ব্যঘাত, প্রস্রাবে পাথর যাওয়া, চোখের পাতা বা পা ফোলা, ত্বকের রং ফ্যাকাশে হওয়া, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, শরীরে কালচে হয়ে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। এগুলোই মূলত কিডনি সমস্যার প্রাথমিক ও গুরুতর লক্ষণ।’

কিডনির রোগ শনাক্তের বিষয়ে ডা. সামাদ বলেন, ‘ইউরিন ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই কিডনির সমস্যা সনাক্ত করা যায়।’

‘প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হলে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হওয়া সম্ভব সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে। আর কিডনির সমস্যা ধরা পড়লেই তা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই।’

কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায় কী?

এ প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক জানান, শরীরচর্চার বিকল্প নেই। দৈনিক আধা ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১৫ মিনিট জোরে হাঁটলে গড়ে ৩ বছর পর্যন্ত আয়ু বেড়ে যায়। পাশাপাশি ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এটি বাদ দিলেও হার্ট অ্যাটাকসহ কিডনি রোগের ঝুঁকি কমবে।

ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত কিডনির পরীক্ষা করাতে হবে। খাওয়ার বিষয়েও সাবধান থাকতে হবে। নিয়মিত ফল ও শাকসবজি খেতে হবে।

এর পাশাপাশি লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। বিশুদ্ধ পানি পান করুন ও পরিচ্ছন্ন থাকুন।

 

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ