টাকা লেনদেন বন্ধে মোবাইল নিষিদ্ধ, বসছে সিসি ক্যামেরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের ওপর প্রার্থীদের প্রভাব বিস্তার, এমনকি ভোট কেনা, ভোট প্রদানের পর মোবাইল ফোনে ব্যালট পেপারের ছবি তুলে আনার জন্য কোথাও কোথাও প্রার্থীসহ স্থানীয় এমপিরা ভোটারদের চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব কৌশল ঠেকাতে, টাকা লেনদেন বন্ধে এবং ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ভোট দিয়ে প্রমাণ রাখতে না পারে তার জন্য ভোটারদের মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশের আগে ও ভোট দিয়ে বের হওয়ার পরে তল্লাশিও করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য বরগুনাসহ কয়েকটি জেলায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বুধবার দেশের ৬১টি জেলায় প্রথমবারের মত জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হবেন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠেয় এটাই সর্বশেষ এই নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পরোক্ষ ভোটে এই নির্বাচন হলেও অন্যান্য সাধারণ ভোটের আদলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনসহ অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য কমিশন সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এদিকে এই নির্বাচনে সরকার দলের এমপিদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।অনেক প্রার্থী ও তাদের লোকজন ভোটারদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভোটারদের ভোট দিয়ে প্রমাণ হিসেবে ব্যালট পেপারের ছবি মোবাইলে ধারণ করে আনার জন্যও চাপ প্রয়োগের অভিযোগ এসেছে।

অবশ্য এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এজন্য ভোটাররা যাতে ব্যালট পেপারের ছবি তুলে আনতে না পারেন, তার জন্য মোবাইলহ সব ধরনের ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কমিশন থেকে এই সিদ্ধান্ত প্রতিপালনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশণা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনে যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তার জন্য সংসদ সদস্যদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন থেকে মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার  মো. শাহনেওয়াজ বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কমিশন চায় নির্দলীয় এই নির্বাচনটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দশনা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি  বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা (এমপি) যাতে আচরণবিধি মেনে চলেন সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্পিকারের কাছে কমিশন চিঠি পাঠিয়েছে।’

মো. শাহনেওয়াজ বলেন, ‘যেসব সংসদ সদস্য এলাকায় আছেন স্পিকার যেন তাদের নির্দেশ দেন এলাকা ছেড়ে চলে আসার জন্য। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তারা যেন এলাকা থেকে সরে আসেন। সংসদ সদস্যরা সম্মানিত ব্যক্তি।  আশা করি, তারা গুরুত্ব বুঝে এলাকা থেকে চলে আসবেন।’

বরগুনায় বসেছে সিসি-ভিডিও ক্যামেরা

পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের উদ্বৃতি দিয়ে আমাদের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলার ১৫টি কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, ‘নির্বাচনে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে যাতে দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করা যায়, সে লক্ষ্যে জেলার প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। তাছাড়া ২৪ ঘণ্টা একটি ভিডিও ক্যামেরা চালু রাখা হবে।’

বরগুনা জেলা রিটার্নি কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ড. বশিরুল আলম বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী আগামী ২৮ ডিসেম্বর বরগুনাবাসীকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন