রবিবার , ২৩ জুলাই ২০২৩ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

জন্মভূমি ও নিজ জনপদের উন্নয়নে আপোসহীন নেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন

Paris
জুলাই ২৩, ২০২৩ ৭:২০ অপরাহ্ণ

রাশিক দত্ত :

মাতৃভূমি যাঁর পরিবার নগরী যাঁর সংসার,নিজের সংসার নিজেই সাজায় গৃহকর্তা তেমন। এই নগরী জনগণের স্বপ্নভূমির মতো করে সাজিয়ে তুলেছেন যেই কারিগর নগর কর্তা তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি শৈশব থেকেই, পরিচয়টাও দীর্ঘদিনের। যাঁর রাজনীতির দূরদর্শিতা, উন্নয়ন মূলক চিন্তাধারায় প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হই। আমি অনেক জাতীয় পর্যায়ের নেতার মুখে তাঁকে ঢাকা যাওয়ার আমন্ত্রণ দিতে শুনেছি, তাঁকে রাজশাহী ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতি করার অনুরোধ করেতেও শুনেছি।

তাঁকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করেছে তাঁর কেন্দ্রীয় শুভাকাঙ্ক্ষী নেতারা, তাঁরা বলতেন “কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আপনার সম্ভাবনা অনেক বেশী এবং কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হলে নীতি নির্ধারণীতে ভূমিকা রাখতে পারবেন, মানুষের অধিকারর কল্যাণ করতে পারবেন।” কিন্তু তাঁকে তাঁরা রাজি করাতে পারেনি। তিনি বারবার তাদের বলেছেন ‘রাজশাহী আমার প্রথম ও শেষ ঠিকানা, আমার বাবা এখানে শুয়ে আছেন, আমি রাজশাহী ছেড়ে কোথাও যাব না ।

আমার বড় নেতা হওয়ার দরকার নেই। রাজশাহীকে দেখার কেউ নেই, আমি রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহীর জনগণ নিয়েই থাকতে পছন্দ করি, রাজশাহীবাসীর মাঝেই থাকতে চাই। ২০১৩ মেয়র নির্বাচনের পর আবারও তাকে পুনরায় ঢাকায় যাওয়ার অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় বিশেষ নেতারা। তাঁরা বলেছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ ছেড়ে ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার জন্য ।

তিনি ঢাকায় স্থায়ী হলে জাতীয় নেতার ছেলে হিসেবে আওয়ামী লীগের বড় পদে যাওয়া কঠিন কোন কাজ নয় তাঁর কাছে। তাঁর যে মেধা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের অভিজ্ঞতা, তিনি মহান নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র কাছাকাছি থেকে নিয়মিত কাজ করলে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয় তাঁর কাছে।কেননা স্বয়ং দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাঁকে নিজের ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসে। কিন্তু তাঁকে কেও রাজী করাতে পারেনি। তাঁর একই কথা, রাজশাহী আমার, আমি রাজশাহীর, রাজশাহীতে জন্ম, রাজশাহীতেই মরতে চাই, অন্য কোথাও যাব না। অনেক রাজনীতিবিদের সাথে কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে।

আমি নিজেও রাজনীতি করি এবং প্রতিনিয়ত অন্যের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করি। এতক্ষণ যে মহান নেতার কথা বলছিলাম তিনি আর কেউ না, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র, রাজশাহীর সর্বজনীন নেতা, আধুনিক রাজশাহীর রূপকার জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। তাঁর মত এমন মানব প্রেমিক, এমন এলাকা প্রেমিক রাজনীতিবিদ খুব কম দেখার সৌভাগ্য হয়েছে এ যুগের মানুষের। মানুষ মাত্রই ভুল ত্রুটি থাকবে। জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ত্রুটি মুক্ত মানুষ এমন দাবী করব না।

তবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ত্রুটি ছাপিয়ে তিনি একজন প্রকৃত অর্থে দেশপ্রেমিক ও নিজ জন্মভূমির প্রতি নাড়ির টান লাগা বিরল রাজনীতিবিদ ও অবকাঠামো উন্নয়নবিদ একজন মানুষ। ২০০৮ সালে জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রথমবার তিনি শত বছরের জীর্ণশীর্ণ রাজশাহী মহানগরের উন্নয়ন করে মানুষ দৃষ্টি উন্নয়ন মুখি করেছেন। তাঁর পিতা জাতীয় নেতা শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধকালিন প্রথম সরকারের মন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারীদের অন্যতম। তিনি বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর তিনি কারারুদ্ধ হন। জাতির পিতার হত্যাকারী বাংলাদেশ বিরোধী চক্রের আতঙ্ক ছিল যে, আবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে।এজন্য তারা সবচেয়ে জনপ্রিয় নির্লোভ, অকুতোভয় সংগঠক জাতীয় চার নেতাকে নিরাপদ জেলখানার অভ্যন্তরে নৃশংসভাবে হত্যা করে। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের পুত্র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। পিতার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর বহুকষ্টে প্রবাসে শিক্ষা জীবন শেষ করে রাজশাহীতে প্রত্যাবর্তন করে রাজনীতিতে যোগদান করেন। তখন রাজশাহীর আওয়ামী লীগের অবস্থা ছিলে খুব নাজুক। মহানগরের সমগ্র জনগোষ্ঠীর এক চতুর্থাংশের কম মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থন করতো।

সেখানে দল গোছানো এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। জাতীয় নেতার সন্তানরা সাধারণত ঢাকায় জাতীয় রাজনীতিতে যোগদান করে সম্মানজনক কেন্দ্রীয় নেতা হন। রাজশাহীর নগরপিতা জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন এঁর কিন্তু সেই সুযোগ ছিল। তিনি কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার সুযোগ গ্রহণ না করে দুর্গম রাজশাহীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভূতপূর্ব, দৃষ্টিনন্দন ও টেকসই উন্নয়ন করেছেন তা এই উপমহাদেশের নগর উন্নয়নে এক বিরল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত । নেতা অনেকে হন, মন্ত্রী, এমপি, মেয়র অনেকেই হন, কিন্তু খায়রুজ্জামান লিটন এঁর মত এত দরদ দিয়ে পরিকল্পিত টেকসই ও যুগান্তকারী উন্নয়ন সবাই করতে পারেন না।

উন্নয়ন করতে মেধা থাকতে হয়, দৃষ্টিভঙ্গি সুদূরপ্রসারী হতে হয় এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সরকারী অনুমোদন ও অর্থায়ন প্রাপ্তির দীর্ঘ পথে আঠার মত লেগে থাকতে হয়। এই যোগ্যতা, মানসিকতা ও ধৈর্য সবার থাকে না, এই কঠোর পরিশ্রম সবাই করতে পারেন না। জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন সেটি পেরেছেন, পারেন এবং আগামিতেও পারবেন। সর্বোপরি বলা যায় যে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন এই নগরীর জনগণের সাথে ও পাশে থাকতেই নিজেকে উৎসর্গ করেছেন এবং এই নগরবাসী দেশের সবচেয়ে বেশি ভোটে বিজয়ী মেয়র বানিয়ে মাথার মুকুট করে রেখেছেন।

 

রাশিক দত্ত, সভাপতি, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগ ও সাংগঠনিক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ

সর্বশেষ - মতামত