চারঘাটে চালের বাজারে অস্থিরতা: বেকায়দায় খেটে খাওয়া মানুষ

চারঘাট প্রতিনিধি:
করোনা সংক্রমন আতঙ্কে রাজশাহীর চারঘাটে হঠাৎই বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। আর চালের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। রমরমা বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে চাল ব্যবসায়ীদের। উপজেলা সদরসহ কাকরামারী, সারদা, নন্দনগাছী এলাকার বিভিন্ন চালের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্রি।

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের পাইকারী ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারসাজিতে দাম কমছে না দাম। কবে কমবে তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এসব পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা বেড়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, চালের দাম দ্রুত না কমলে বাজারে অন্য খাদ্যপণ্যেও অস্থিরতা বাড়বে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ।

আর বিক্রেতারা বলছেন, মিল ও পাইকারী আড়ৎ গুলোতে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। চারঘাট বাজারে চাল কিনতে আসা দিনমজুর আবদুল কাদের বলেন, চালের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে দিনমজুরদের তিন বেলার বদলে দুই বেলা খেয়ে বাঁচতে হবে। অন্যথায় না খেয়ে থাকতে হবে। সারাদিন কাজ করলে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। তাও আবার করোনা আতঙ্কে বাড়ী থেকে বের হতে ভয় লাগছে। এতে একদিন কাজ করলে দুই দিন অলস বসে থাকতে হচ্ছে।

এ অবস্থার মধ্যে দুই কেজি চাল কিনলেই শাক-সবজি বা তেল-মসলার টাকায় টান পড়ে। অন্য খরচ তো রয়েছে। আর চালের দাম বাড়ায় আটার দামও বেড়েছে। ফলে ভাতের বদলে রুটি খাওয়াও যাচ্ছে না। আগে বাজারে খোলা আটা ২৬ টাকা থেকে ২৮ টাকা কেজি ছিল। এখন আটাও ৩২ টাকা থেকে ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই চালের দাম না কমলে নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্ধাহার-অনাহারে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন দিনমজুর আবদুল কাদের।

চারঘাট বাজারের চালের আড়তদার সাহেল রানা সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমরা রাজশাহীসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কুষ্টিয়া থেকে পাইকারি আড়ত ও মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে থাকি। তবে সেখানেও বাজার ঊধ্বমুখী। আজ থেকে ১০-১৫ দিন আগে ৫০ কেজির বস্তা মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ১৯শ’ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫৫০ টাকায়। স্বর্না চাউল গত সপ্তাহে ছিল ১৪ শ টাকা থেকে ১৫ শ টাকা। বর্তানে স্বর্না চাল বিক্রি হচ্ছে ১৮ শ টাকা থেকে ১৮ শ ৫০ টাকায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, করোনাকে পুজি করে কোন ব্যবসায়ী কারসাজির মাধ্যমে চাউলের দাম বৃদ্ধি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

স/অ