চাঁপাইনববগঞ্জে আবারো এনজিও লাপাত্তার শঙ্কায় গ্রাহকদের বিক্ষোভ; ২ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক,চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আবারো যমুনা মানব কল্যান সংস্থা নামক একটি এনজিও লাপাত্তা হবার শঙ্কায় ৬ শতাধিক গ্রাহক এনজিও টির একটি শাখার সামনে জমায়েত হয়ে ২ কর্মকর্তা কে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় অন্তত ৬ শতাধিক গ্রাহক তাদের পাওনা টাকার জন্য বিক্ষোভ করতে থাকে।ঘটনাটি সোমবার(১১ অক্টোবর) সকালে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাতরা নতুনবাজার এলাকায় ঘটে।

এর আগে একই এলাকার রুপালী, কুসুমকলি ও মার্সাল নামের ৩ টি এনজিও অর্থ আত্মসাত করে পালিয়ে যাবার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মাইক্রো ক্রেডিট অথারিটির নিবন্ধন না থাকলেও আইন অমান্য করে স্থানীয়ভাবে সমাজ সেবা,মহিলা সংস্থা ও যুব উন্নয়ন থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে ১৬ টি শাখার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করছিল যমুনা নামের এ এনজিও। গত ৬ মাসের মধ্যে ধাইনগর , চৌডালা সহ ৪ টি শাখা বন্ধ হয়ে গেলে চাতরা নতুন বাজারের শাখায় ভিড় করতে থাকে গ্রাহকরা। রোববার রাতে কয়েকজন গ্রাহক চাতরা শাখাটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জানতে পেরে এর এরিয়া ম্যানেজার কবির হোসেন ও চাতরা শাখা ব্যবস্থাপক সেলিম কে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে।এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত(বিকেল ৫টা পর্যন্ত) ঐ ২ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ এবং এর পরিচালক পলাতক রয়েছে।

বিক্ষোভকারী হাসেম মিঞা জানান, তার ভগ্নিপতি মারা যাবার পর বোন হাজেরা বেগম সংসারের খরচ চালাতে এবং নিজের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে জমি বিক্রির ৮ লাখ টাকা যমুনার চাতরা শাখায় রেখে লাভের টাকায় সংসার চালাতেন।কিন্তু ৬ মাস থেকে তিনি লাভ তো দুরের কথা মূল টাকাও পাচ্ছেননা।উল্টো তাদের বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে।

অপর গ্রাহক আলেয়া বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, তার, ছেলের ও স্বামীর দিনমজুরির মাধ্যমে আয় করা ৬ লাখ টাকা জমা দেয়ার ১ বছরের মাথায় আর কোন হদিস নাই। তাই তিনিও খবর পেয়ে এখানে জমায়েত হয়েছেন।

অন্যদিকে চৌডালা শাখার ব্যবস্থাপক জানান, যমুনার নামে কোন এম আর এফ (মাইক্রো ক্রেডিট অথারিটি) নিবন্ধন না থাকার পরও ১৬টি শাখার মাধ্যমে এনজিও টি আর্থিক লেন-দেন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার দাবী তার কার্যালয়ের গ্রাহকের ১৬ লাখ টাকা উঠিয়ে নিয়ে মালিক লাপাত্তা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অবরুদ্ধ এরিয়া ম্যানেজার কবির হোসেন দাবী করেন, তাদের এনজিও পালিয়ে যাবার বিষয়টি গুজব।তারা টাকার ব্যবস্থা করে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।তাদের পরিচালকের ফোনে যোগাযোগ করতে না পারায় তারা বিব্রত বলেও জানিয়েছেন।

এ সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া শাখাগুলোর শাখা ব্যবস্থাপকরাও চাতরার বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন এবং তাদের পাওনা টাকা ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অপরদিকে সংস্থাটির পরিচালক মঈন আলীর সাথে তার ২ টি সেল নম্বরে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া না গেলেও শিবগঞ্জ সমাজ সেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, যমুনার পরিচালক মঈনের মালিকানাধীন আর এস ডি এস নামক একটি এন.জি.ও এর নামে এম আর এফ লাইসেন্স থাকলেও যমুনার নামে নেই। তবে যমুনার নামে সমাজ সেবা ,মহিলা সংস্থা ও যুব উন্নয়ন থেকে নিবন্ধন করা রয়েছে।তিনি আরও জানান,যমুনার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে একই এলাকার কুসুমকলি, মার্সালসহ কয়েকটি এনজিও অর্থ আত্মসাত করে পালিয়ে যাবার বিষয়টি তিনিও জেনেছেন।তবে তাদের কোন নিবন্ধন তার দপ্তর থেকে নেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

জেএ/এফ