গোদাগাড়ীতে পরীক্ষামূলক ব্রি ধান-৮২ এর চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গোদাগাড়ীর বিভিন্ন মাঠে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৮২ জাতের আউস এর চাষ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আদাড়পাড়ার মাঠে এই নতুন জাতের ধান কাটা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গোদাগাড়ী কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার লুৎফুন নাহার, কাঁঠালবাড়িয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার বেলাল উদ্দিন, বিদিরপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও কৃষক দারুল হাসানসহ অন্যান্য কৃষকবৃন্দ।

গোদাগাড়ী কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার লুৎফুন নাহার বলেন, এই ধান উচ্চ ফলনশীল এবং সামান্য খরচে উৎপাদিত হয়। এই ধানের চাল মধ্যম চিকন এবং সুস্বাদু হবে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কৃষকরা এই জাতের ধান চাষ করে লাভবান হবেন। বিঘাপ্রতি ফলন বেশী হওয়ায় এবং অনেকাংশে পোকা মাকড় ও রোগ বালাই সহিষ্ণু ও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক কম ব্যবহার হওয়ায় খরচও অনেক কম বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেই সাথে বর্ষা মৌসুম হওয়ায় সেচও কম প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কাঁটালবাড়িয়া ব্লকের কৃষি অফিসার বেলাল উদ্দিন বলেন, এই ধানের চাষ বীজতলা থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত সময় লাগে মাত্র ১১০দিন। পোকা রোগ বালাই কম হওয়ায় ধানের চিটা নাই বললেই চলে। একটি শীষে ১৯০টির অধিক ধান হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। আর বিঘাপ্রতি ফলন বিশ মন করে হওয়ায় কৃষকরা অল্প খরচে এই ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, বিঘাপ্রতি ইউরিয়া সার ২ কেজি, পঠাশ সার ১৫ কেজি, জিপসাম সার ৮ কেজি এবং দস্তা মাত্র ১ কেজি একবার জমিতে ব্যবহার করলেই চলে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেইসাথে বিঘাপ্রতি বীজ লাগে মাত্র ৫ কেজি। রোগ বালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই জাতের ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমন তেমন হয়না বললেই চলে। যদি কখনো আক্রমন হয় তাহলে খোলাপড়া ও পাতা ঝলসানো রোগ হতে পারে। তবে এই জাতের ধান সম্পূর্ণভাবে ব্লাস্ট রোগ থেকে মুক্ত বলে তিনি জানান।

উপসহকারী কৃষি অফিসার আশরাফুল বলেন, যদি কখনো ধানে রোগের প্রাদুর্ভাব হয় তাহলে প্রোপিকনাজল, টেবুকলাজল ও কার্বনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক অত্যন্ত কার্যকরী। এই ছত্রাকনাশক বিঘাপ্রতি ৫০ লিটার পানির সাথে ১০০মিলি মিশিয়ে স্প্রে করলে ভাল উপকার পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে জমির মালিক কৃষক দারুল হাসান জানান, ১বিঘা জমিতে তিনি মাত্র ৫ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। ধান কেটে ১বিঘা জমিতে তিনি বিশ মন ধান পেয়েছেন বলে জানান এই কৃষক। তিনি অন্যান্য কৃষকদের এই ব্রি -৮২ জাতের ধানের চাষ করার জন্য আহবান জানান।

স/শা