গুদামজাতের সময় পুঠিয়ায় ব্যবসায়ীর ৫০ বস্তা ‘নিম্নমান’র ধান জব্দ

পুঠিয়া প্রতিনিধি:

সারাদেশে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বোরো মৌসুমে প্রকৃত কৃষকের ধান, গম ও চাল সংগ্রহ করছে সরকার। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার করার কথা থাকলেও রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের নিম্নমানের ধান কিনছে খাদ্য বিভাগ।

আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এক যুবলীগ নেতার নিম্নমানের ৫০ বস্তা ধান গুদাম জাত করার সময় হাতে নাতে আটক করা হয়েছে। পরে ৫০ বস্তায় আড়াইটন ধান জব্দ করে গুদাম থেকে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা ছাড়াও ঘটনার তদন্ত করে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উপজেলা প্রশাসন, প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, বিকেলে দু’জন কৃষকের কার্ড দেখিয়ে ৫০ বস্তা ধান গুদামজাত করার সময় খাদ্যগুদামে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওলিউজ্জামান। এসময় গুদামজাত করা ধানের আদ্রতা মেপে দেখা যায় ধানগুলো সবই নিম্নমানের। এমনকি যেই কৃষকের কার্ডে ধানগুলো গুদামজাত করা হচ্ছিলো তাদেরও ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। পরে তিনি খাদ্যগুদাম থেকে ৫০ বস্তায় নিম্নমানের আড়াই টন ধান জব্দ করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসেন।

স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা গেছে, নিম্নমানের ধানগুলো জিউপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ব্যবসায়ী ডলার মাহমুদের। তিনি স্থানীয় কৃষকদের কার্ড সংগ্রহ করে বাজার থেকে কমদামে নিম্নমানের ধান কিনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় গুদামে ধান দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে বিকেলে ট্রলিতে করে নিম্নমানের ধানগুলো গুদামজাত করতে পুঠিয়া খাদ্য গুদামে পাঠিয়েছেন। তবে আটককৃত ৫০ বস্তা ধান তার নয় দাবি করে যুবলীগ নেতা ডলার মাহমুদ বলেন, ওগুলো আমার ধান নয়, আমার আত্মীয় কয়েকজনের কার্ড আছে। কিছুদিন পর সেগুলো দিয়ে আমি ধান দেয়া শুরু করবো। আর ধানের আদ্রতা কম থাকার কারনে ৫০ বস্তা ধান জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, ধানগুলো ব্যবসায়ীর নয় প্রকৃত কৃষকের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওলিউজ্জামান বলেন, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক গুদামে গিয়ে নিম্নমানের ৫০ বস্তা ধান জব্দ করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের যোগসাজসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধানগুলো গুদামজাত হচ্ছিলো বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি আরো বলেন, জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়াও এর সাথে কারা কারা জড়িত আছে সেটি তদন্ত করে বের করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

স/শা