খাবারের মূল্য পরিশোধ নিয়ে ঝগড়া, বন্ধুকে হত্যা

দোকানে একসঙ্গে খাওয়ার পর দাম কে মেটাবে, তা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ট্যাঙ্কার চাপা দিয়ে সঙ্গীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে। ভারতের হাওড়ার আন্দুলের পাঁচপাড়ায় গত শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহত চালকের নাম বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী (৩৮)। তাকে হত্যার অভিযোগে তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের নাম রাজু শর্মা, অঙ্কিত শর্মা এবং রাজেশ চক্রবর্তী। তারা প্রত্যেকেই ট্যাঙ্কারচালক ও খালাসি বলে জানা গেছে।

পুলিশ বলছে, ট্যাঙ্কারচালক বিশ্বজিৎ ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে একটি পেট্রল পাম্পে কাজ করতেন। তার বাড়ি নাজিরগঞ্জের পোদরার চন্দ্রবাটিতে।

গত শুক্রবার মৌরিগ্রামের ইন্ডিয়ান অয়েল সংস্থা থেকে তেল নিয়ে দু’টি ট্যাঙ্কার একসঙ্গে হাবরার গুমায় একটি পেট্রল পাম্পে যায়। একটি ট্যাঙ্কার নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ আর অন্যটি নিয়ে গিয়েছিলেন তার তিন বন্ধু রাজু, অঙ্কিত ও রাজেশ।

বিশ্বজিৎ সেখানে নিজের ট্যাঙ্কার খালি করে গাড়ি রেখে তিন বন্ধুর সঙ্গে অন্য ট্যাঙ্কারে চড়ে হাওড়ার দিকে রওনা হন। পরদিন সকালে বিশ্বজিতের বাড়িতে খবর যায়, আন্দুলের পাঁচপাড়ায় তার রক্তাক্ত দেহ ট্যাঙ্কারের ভিতরে পড়ে আছে। পরিবারের লোক তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দীর্ঘদিন পর চার বন্ধু একসঙ্গে হওয়ায় তারা একটি ট্যাঙ্কারে চড়ে আলমপুর যান। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে মদপান করেন।

পরে দাম দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত খাবারের দাম দিতে হয় রাজুকে। পুলিশ জানায়, খাবারের দাম দেওয়ায় রাজু নামের ওই খালাসি রেগে ছিলেন। তিনি বাড়ি চলে যাওয়ার নাম করে আচমকা ট্যাঙ্কারে উঠে বসেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা তিন জনের দিকে সেটি চালিয়ে দেন।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, সবাই রাস্তা থেকে সরে গেলেও বিশ্বজিৎ সরতে পারেননি। ট্যাঙ্কারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি  ট্যাঙ্কারের মাঝখানে আটকে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।

পুলিশ বলছে, পরে কী করবে বুঝতে না পেরে তিনি বন্ধু মৃত বিশ্বজিৎকে তুলে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের তিন জনেরই একজন বিশ্বজিতের পরিবারকে খবর দিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ