কোয়ারেন্টাইনের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি, উল্লাপাড়ায় এসআই প্রত্যাহার

এক ব্যাবসায়ীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মানিক মিয়াকে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।

এসআই মানিক মিয়া মেডিকেল ছুটিতে থাকাকালীন সময় তার কর্মস্থল ছেড়ে পাশের তাড়াশ থানার তালম ইউনিয়নের শিবপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী আবুজল প্রামাণিককে ভয় দেখিয়ে এ চাঁদা দাবি করেন। ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী মুর্শিদা খাতুন উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসির কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। বিষয়টি সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বিপিএম জানা মাত্র তাকে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করার নির্দেশ দেন।

এর আগে দায়িত্বে অবহেলা ও কর্মক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়ার অপরাধে এসআই মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া থানার সিনিয়র সহকর্মীরা দুটি জিডি করেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী মুর্শিদা খাতুন জানান, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে আবুজল প্রামানিক ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি এসে আটকা পড়েন। জীবিকার তাগিদে আবুজল প্রামাণিক গত এক মাস ধরে এলাকায় মাস্ক বিক্রি শুরু করেন। ঢাকা থেকে আসার কারণে গত ২৩ এপ্রিল তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলে ভয় দেখিয়ে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করলে মুর্শিদা খাতুন অনেক অনুরোধ করে ২ হাজার ৬০০ টাকায় রফা করেন। পরে মুর্শিদা খাতুন উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসির কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি দীপক কুমার বলেন, গত বুধবার রাতে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক আদেশে এসআই মানিককে ক্লোজ করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ আদেশপত্রে চাঁদা দাাবির অভিযোগ না থাকলেও দায়িত্বে অবহেলার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মেডিকেল ছুটিতে থাকাকালে তাড়াশ উপজেলার ওই গ্রামে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর সাথে যে ঘটনাটি সে ঘটিয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এডিশনাল এসপি আবু ইউসুফ ক্লোজের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি পুলিশ বিভাগের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এম সানোয়ার হোসেন সাজুকে তাড়াশ প্রেসক্লাব থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাড়াশ প্রেসক্লাব সুত্রে জানা যায়, ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ও প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ছানোয়ার হোসেন সাজুকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয়। তিনি ওই এসআইয়ের সহযোগী হিসাবে ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সনাতন দাশ বলেন, প্রাথমিকভাবে সাংবাদিক সানোয়ার হোসেন সাজুর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাড়াশ প্রেসক্লাবের এক জরুরী সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সনাতন দাশকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

সূত্র: দেশ রুপান্তর