ঢাকা থেকে পালিয়ে রাজশাহীতে করোনার রোগী, অতঃপর

শামসুজ্জোহা বাবু, গোদাগাড়ী:

ঢাকা থেকে পালিয়ে করোনা পজেটিভ রোগি রাজশাহী  এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে করোনা পজেটিভ রোগী এলাকায় ফেরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি রোগীর ছোট ভাই জেমস মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন। তার ভাই বর্তমানে রাজশাহীর একটি খ্রিষ্টান মিশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় ওষুধ কম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন ৩৫ বছরের ওই যুবক। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলা গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পালপুর ধরমপুর গ্রামে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় ওষুধ কম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন ৩৫ বছরের এই যুবক। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলা গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পালপুর ধরমপুর গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতে এ্যাম্বুলেন্সযোগে এসে এই রোগী প্রথমে রাজশাহীতে আশ্রয় নেন। এসময় তার পরিবারের লোকজন তথ্য গোপন করে গতকাল শুক্রবার (১ মে) সকাল ৯ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে হাসপাতালে ভর্তির সময় নিজে করোনা পজিটিভ এমন তথ্য গোপন করেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর শরীরে করোনা উপসর্গ দেখতে পেলে তাকে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন।

 

এদিকে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পালপুর ধরমপুর গ্রামে করোনা রোগী এসেছে এ নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে করোনা রোগী কোথাই সেটা জানার কৌতুহল সবার চোখে মুখে কিন্তু আতঙ্ক বিরাজ করছিল সবার মধ্যে।

 

অনুসন্ধানে খুলতে থাকে ঘটনার রহস্যজট। গতকাল রাত ৮ টার দিকে প্রথমে এলাকাবাসী বলে করোনা আক্রান্ত রোগী ঢাকা থেকে পালিয়ে এসেছেন।

আক্রান্ত রোগীর এক বন্ধু মুঠোফনে নিশ্চিত করে, তার সাথে বন্ধুর ( করোনা রোগী) কথা হয় তিনি তাকে বলেন- আমি করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। ঢাকা থেকে বর্তমানে রাজশাহীতে অবস্থান করছি।

 

গতকাল রাত ১০ টার দিকে জানা যায়, আক্রান্ত সেই যুবক শুক্রবার সকাল ৯ টায় রামেক হাসপাতলে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের নির্ধারিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠান।
মুঠোফোনে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ কিবরিয়া এমন
কথা শুনে অবাক হন। এর মধ্য রামেক হাসপাতাল ও খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল তোলপাড় শুরু হয়।

 

মোবাইল ফোনে ওই চিকিৎসক বলেন- ঘটনা সঠিক। সে করোনায় আক্রান্ত, কিন্তু তথ্য গোপন করেছিল।

 

রাত ১২ টার দিকে খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুরোজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঢাকা থেকে পালিয়ে আশা যুবক তার করোনা পজেটিভ সেটা সে স্বীকার করেছেন। তবে কোনো এসএমএস বা রিপোর্ট দেখাতে পারেননি। তবে আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিরাপদে আছেন ওই রোগী।

 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২২ এপ্রিল শরীরে সর্দি-জ্বর ও কাশি দেখা দিলে তিনি নিজেই ২৭ এপ্রিল ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনার লক্ষণ আছে কি না-তার নমুনা পরীক্ষা করান। এতে ২৮ এপ্রিল রিপোর্টে আসে তার করোনা পজোটিভ। এই অবস্থায় ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে পালিয়ে রাজশাহী ফিরেন তিনি। এলাকায় করোনা রোগী এসেছে- এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে পরিবারের লোকজন রামেক হাসপাতালে তথ্য গোপন করে ভর্তি করে।

স/আর