নিজস্ব প্রতিবেদক:
সোমবার বেলা সাড়ে ১২। হাতে একটা ব্যাগ আর কোলে দুই বছরের একটি শিশু রাইসা। উদ্দেশ্যে ঢাকা, কর্মস্থলে ফিরে যাওয়া। স্বামী রমজান আলী কিনতে গেছেন বাসের টিকেট। কাউন্টারের পাশে দাঁরিয়ে আছেন স্ত্রী কহিনুর ও সন্তান রাইসা।
স্ত্রী কহিনুরের সাথে কথা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ঈদের আগে দিন এসেছি এখানে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত টিকিট না পাওয়ার কারণে রাজশাহী থেকে উঠতে হচ্ছে বাসে। এখানেও শুনছি টিকিটের অভাব।’
ঈদের ছুটি গতকাল (রোববার) পর্যন্ত ছিল। তার পরেও দুইদিন বেশি ছুটি নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বাসে তেমন ভিড় হবে না। কিন্তু দেখছি আগের মতই আছে।
তার কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসলেন স্বামী রমজান আলী। তার সাথে কথা হলে তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘ঈদের আগে দিন রাজশাহীতে এসেছিলাম ৫০০ টাকায়। এখন যেতে হচ্ছে সাড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায়। তার পরেও আবার টিকিট নাই। বেশি টাকা দিতে চাইলেও তারা টিকেট দিতে পারছেনা। তারা বলে, টিকেট নাকি বিক্রি হয়ে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অন্য সময় রাজশাহী থেকে ঢাকা যেতে একটু ভালো বাসে ৫০০ সাড়ে ৪০০ টাকা লাগে। আর ভিআইপি বাসগুলোতে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে নেই।’
‘রাজশাহীর কাউন্টারে তারা বেশি ভাড়া চাইতে পারছেনা। তাই ভালো বাসগুলোর ভাড়া আগের দিনের মতই ৫০০ টাকা বলছে। কিন্তু এখন নোকাল বাসগুলোতে চাই ৫০০ টাকা। তাহলে কি ভিআইপি ৫০০ নোকালো ৫০০ টাকা টিকেট। ‘আসার থেকে যাওয়া ভাড়াই বেশি।’
এদিকে, হানিফ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, ন্যাশনাল পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস্, একতা পরিবহনের রাজশাহীর বাস কাউন্টারগুলোতে দেখে গেছে টিকেট শেষ। টিকেট প্রত্যাশিরা এসে খালি হতে ঘুরে যাচ্ছে। কাউন্টারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সব টিকেট শেষ হয়ে গেছে। আর নোকাল পরিবহন গুলোতে বিভিন্ন ভাড়ায় ডেকে গাড়িতে তুলছে যাত্রীদের। নোকালে যাত্রীদের নিচ্ছে ছাঁদ ২০০ আর সিট ৫০০ টাকা।
আর এক বাসযাত্রী নগরীর আম চত্বর এলাকার আবদুল সালাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘বাসের কোথাও অগ্রীম টিকেট নেই। নোকাল বাসই এক মাত্র ভরসা। কাল অফিসের কাজে যোগদান করতে হবে। তাই যে ভাবেই হোক না কেনো আমাকেই ঢাকা যেতে হবে। নোকাল বাসগুলোর ছাঁদের ভাড়া চাচ্ছে ২০০ টাকা করে। উপাই নাই যেতেই হবে।
বাসের ছাঁদে ওঠা নাসরিন আক্তার নামের এক নারী সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘ঈদের আগের দিন ট্রেনের ছাঁদে এসেছি। এবার বাসের ছাঁদে যেতে হচ্ছে। ছুটির পরেও বাড়তি ছুটি নিয়ে ছিলাম। সেটাও শেষ। এখন যেতেই হবে। কাজে যোগ না দিলে বেতন কাঁটা যাবে।
এতো গলে বাসের কথা। ট্রেনের টিকেটের আরো হাহাকর। কৃতৃপক্ষ বলছে, আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত ট্রেনের কোন টিকেট নাই। কেত্রারা বলছে, ট্রেনের টিকেট না পাওয়া গেলেও অনেকই টিকেট কিনে নিয়ে আসছেন ভেতর থেকে।
টিকেট প্রত্যাশী আসমা খাতুন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, তাদের কাছে ট্রেনের টিকেট আছে তবুও তারা দিচ্ছে না। বেশি টাকা আদায় করার জন্য। অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়েও পাওয়া যাচ্ছে না টিকেট। দেখি বিকল্প হিসেবে বাসে যেতে হবে।
স/মি