একজন নগর পিতার কাছে আমাদের চাওয়া-পাওয়া

আরাফাত রুবেল:

রাজশাহী নগরীর বিলসিমলা রেল ক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত ফোরলেন সড়কে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়কবাতির উদ্বোধন করেছেন- আমাদের মাননীয় মেয়র মহোদয়। মেয়র লিটনের দূরদর্শিতা, শৈল্পিক মনোভাব আর সু-নিপুণ চিন্তা-চেতনা তাঁর কাজের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এইসব সড়কবাতি শুধু আলো আর নিরাপত্তা বাড়াবে তাই নয়; সাথে সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি করবে। রাজশাহীবাসী এমনি একজন নগরপিতার স্বপ্ন দেখে, দলমত নির্বিশেষে ভোট দিয়েছিলেন চার নেতার সুযোগ্য সন্তান এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে।

আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম- একটি আগামী সুন্দর পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরীর। যা ইতোমধ্যে হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে । বর্তমান করোনার বৈশ্বিক দুরবস্থার মধ্যে রাজশাহীর মানুষ চিত্র বিনোদন ভুলে গিয়েছিল। এখন রাজশাহীর মানুষ এমন আলোক ঝলমল নতুন রাস্তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত! সন্ধ্যার পরই সেখানে হয়ে উঠছে পারিবারিক চিত্র বিনোদন। বিশেষ করে নারী, শিশু ও প্রবীণদের আনন্দ দেখার মতো।

এমনই এক দম্পতি ফেসবুকে খবর দেখে এসেছিলেন, নগরীর তালািমারী থেকে বয়োবৃদ্ধ কমেলা বেগম ও হাফেজ উদ্দিন। তাঁরা বললেন, খুব ভালো লাগছে বাবা, সারাজীবন এমন দৃশ্য টিভি সিনেমায় বিদেশের ছবি দেখেছি। আজ স্ব-চক্ষে দেখলাম। এরই মধ্যে দেখলাম, ছোট্ট শিশুরা ফুটপাতে দৌঁড়াদৌঁড়ি করছে। বিভিন্ন ঢংয়ে ছবি তুলছে। মায়েরা ব্যাস্ত তাদের বাচ্চাদের নিয়ে। এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন ও রজব আলী তাঁরাও খুব খুশি। ফাতেমা আপা তো অট্ট হাসি দিয়ে বলেই বসলেন, আমরা এখন বিলসিমলা বলবোনা।

কেউ বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে বলবো, আমাদের বাড়ি এখন লাইটিং রাস্তার ধারে। ফেরার পথে দেখলাম কিছু যুবক ঝালমুড়ি খেতে খেতে বলছে, আমরা এখন মালোয়েশিয়া সিঙ্গাপুরের বাসিন্দারে মামা। সবকিছু দেখে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভাবলাম, একজন মেয়র চাইলে কতো কিছুই না করতে পারেন ?

সাব্বাশ নগরপিতা! এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। জনগণ আপনাকে মেয়র বানিয়ে ভুল করে নাই। সেই প্রতিদান আপনি রেখেই চলেছেন। এধরনের কাজ বিশেষ করে রাস্তা সম্প্রসারণ করা, বড় চ্যালেঞ্জের কাজ। পরম ধর্য্য ও সহিষ্ণুতার সাথে মেয়র তা করে দেখিয়েছেন।

এবার এক নজরে দেখে নেই এই রাস্তা ও আলোকসজ্জার বিস্তারিত: বিলসিমলা রেল ক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কটিতে ১৭৪ টি খুঁটি বসানো হয়েছে। প্রতিটি খুঁটিতে বসানো হয়েছে দুইটি করে লাইট। মোট ১৭৪টি খুঁটিতে বসানো হয়েছে ৩৪৮টি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতি। যা প্রজাপতির মতো ডান মেলে আছে।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়নে ১৭৩ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বহরমপুর রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত সড়কটি ৩০ ফুট থেকে ৮০ ফুটে উন্নীত করা হয়েছে। সড়কের দুই পাশে ১০ ফুট চওড়া ফুটপাত ও রাস্তার দক্ষিণ পাশে সাড়ে সাত ফুট ড্রেন করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কটিতে বাইসাইকেল লেন নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আইল্যান্ড। সবুজায়নের জন্য আইল্যান্ডে ইতোমধ্যে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।

আলোকায়নের জন্য সড়ক আইল্যান্ডে বাসনো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন লাইট। দৃষ্টিনন্দন এ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হবে। পর্যায়ক্রমে শহরের অন্যান্য সড়কগুলোতেও এমন অলোকসজ্জার বাতি লাগানো হবে বলে রাসিক সূত্রে জানা গেছে।

লেখক: চারুশিল্পী ও ব্যবসায়ী, রাজশাহী