এএসআই হুমায়ুন হত্যায় স্ত্রীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: রাজধানীর শাহআলী থানার এএসআই হুমায়ুন কবির হত্যায় মামলায় স্ত্রীসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-নিহতের স্ত্রী মোছা. রহিমা সুলতানা রুমি এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. রাফা এ মিষ্টি ।

রায়ে নিহতের স্ত্রীর আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোছা. রিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরো এক বছরের কারাভোগ করতে হবে।

রায় ঘোষণাকালে কারাগারে আটক হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী রহিমা সুলতানা রুমিকে আদালতে হাজির করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।

রায় ঘোষণার আগে বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘সমাজে একের পর এক বিভিন্ন কারণে নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটছে। এই মামলার ভিকটিম পুলিশের একজন এএসআই এবং তার স্ত্রী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র নার্স। আসামি রহিমা সুলতানা অপর দুই আসামি রাফা এ মিষ্টি ও রিয়ার সহায়তায় জেনে শুনে, বুঝে ও পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক একই উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে ভিকুরনিয়াম ব্রোমাইড ইনজেকশন পুষ করে ও শ্বাসরোধ করে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে।

দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাকল্পে এই মামলার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান না করলে এ ধরনের নির্মম, নৃশংস ও অগ্রহণযোগ্য হত্যাসহ এ জাতীয় অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। আসামিদের বয়স, পেশা, সামাজিক মর্যাদা যাই থাকুক না কেন ভিকটিমকে হত্যার দায়ে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র প্রাপ্য। আসামিদের সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অনুকম্প বা দয়া প্রদান বা মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা প্রদানের সুযোগ নেই।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, প্রায় ৫/৬ বছর আগে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র নার্স মোছা. রহিমা সুলতানা রুমির সঙ্গে হুমায়ুন কবিবের বিয়ে হয়। তাদের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই রুমির সঙ্গে হুমায়ুন কবিরের ঝগড়া-বিবাদ হয়। ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর হুমায়ুন কবির তার মাকেও ঝগড়ার বিষয়টি অবহিত করে। এর পরদিন পারিবারিক কলহের জেরে পরিকল্পিতভাবে হুমায়ুনের স্ত্রীসহ অপর আসামিরা বিষ প্রয়োগ বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বজলুর রশীদ মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঈনুল ইসলাম  পরের বছর ১২ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।

এদিকে ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রুমি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

সূত্র: রাইজিংবিডি