মঙ্গলবার , ৯ জুলাই ২০১৯ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ঋণখেলাপিরা দুই মাস নতুন ঋণ পাবেন না

Paris
জুলাই ৯, ২০১৯ ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের ওপর হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ শর্ত সাপেক্ষে দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।

ফলে ২ ভাগ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে খেলাপি ঋণ পরিশোধের যে সুযোগ কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছিল, তা আপাতত কার্যকর থাকছে। আপিল বিভাগ বলেছেন, কোনো ব্যবসায়ী এই সুবিধা নিলে দুই মাসের মধ্যে তিনি আর অন্য কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন না।

শুনানিতে ব্যাংক পরিচালনায় সৎ লোকের নিয়োগ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বেঞ্চের এক বিচারক। তিনি অর্থ বিভাগের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, সামান্য ঋণের জন্য গ্রামের কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। বড় বড় ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে সরকার কি ব্যবস্থা নিচ্ছে? বিশেষ শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

সরকার তো দেশ চালাচ্ছে, কিন্তু দেশটা তো জনগণের। আদালত বলেন, ছোট ছোট ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে সব সময় সঠিকভাবে মামলা চলে। কিন্তু বড় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী আইনি ব্যবস্থা হয়?

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে অর্থ বিভাগের আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

অর্থ বিভাগের পক্ষে এ দিন সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, এটা পলিসি মেটার, শিল্প খাত এর সঙ্গে জড়িত। জাতীয় স্বার্থে সরকার এই সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্যদিকে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ঋণখেলাপিদের কাছে যে টাকা আছে তো আছেই। এখন তারা (ঋণখেলাপিরা) এই সুযোগটা (বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া বিশেষ সুবিধা) নিয়ে ব্যাংকে যে টাকাগুলো আছে সেগুলোও নেয়ার পথ তৈরি করেছিল। সে পথ যাতে বন্ধ করা যায়, সেই চেষ্টা ছিল আমাদের।

আমার মনে হয়, আজকের আদেশের কারণে অনেকটাই সফল হয়েছি। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিলে সরকারের কাছে টাকা আসবে, কিন্তু ব্যাংকের টাকা তারা (নতুন ঋণ) নিতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে আমরা আশা করছি, জনগণের রক্ষিত টাকা রক্ষা করা সম্ভব হবে।

মনজিল বলেন, আদালত আদেশ দেয়ার সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আপত্তি জানিয়েছে বলেন, এমন আদেশ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের কার্যকারিতা থাকবে না। তখন এক বিচারক বলেছেন, দুই মাসে আর কী হবে। আর আপনি কি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন যে, এই সুযোগটা দেয়ার পর বেসিক ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংকের মতো আরেকটা ব্যাংক ধসে পড়বে না? সেটা তো পারবেন না।

১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ওই বিশেষ নীতিমালা সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে। এক রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মে হাইকোর্ট এক আদেশে ওই নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।

২৪ জুন অপর এক আদেশে হাইকোর্ট স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ান। এই দুটি আদেশ স্থগিত চেয়ে অর্থ বিভাগ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর শুনানি নিয়ে ২ জুলাই চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান হাইকোর্টের ওই আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আবেদনটি ৮ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার আপিল বিভাগে শুনানি হয়।

উল্লেখ্য, ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে ব্যাংক ঋণের ওপর সুদ মওকুফ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত ও তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ফেব্রুয়ারি মাসে রিট করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।

বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকার ওপর নেয়া ঋণখেলাপিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সেসব তথ্য আদালতে দাখিল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকার ওপর নেয়া ঋণখেলাপিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে সেসব তথ্যাদি সিলগালা অবস্থায় ২৪ জুন আদালতে দাখিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য