ই-কমার্সে বিদেশিদের দেশি অংশীদার নেয়ার শর্ত থাকছে না

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশে ই-কমার্স খাতে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগে স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্বের বাধ্যবাধকতার শর্ত তুলে নেওয়া হচ্ছে।

‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮’তে এ শর্ত দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি এ নীতিমালা সরকার অনুমোদন করে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে ‘ডিজিটাল কমার্স বা ই-কমার্স খাতে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কোম্পানি ও অনুরূপ বিদেশি কোম্পানি ৫১:৪৯ ইক্যুইটি ভিত্তিক মালিকানা ব্যবস্থায় প্রযোজ্য হবে।’

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, জাতীয় বিনিয়োগ নীতিতে ১০০ ভাগ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের সুবিধা দেয়া হয়েছে। সেখানে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার ৫১:৪৯ ইক্যুইটিভিত্তিক মালিকানার শর্তটি সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এটির সংশোধন চাইছে। সে অনুয়ায়ী এই শর্তটির সংশোধন আনা হচ্ছে ।

ই-কমার্স সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নে সেন্টার অব এক্সিলেন্স, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ বা অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল গঠন, ভোক্তাদের জন্য কোড অব কন্ডাক্টসহ বিভিন্ন বিধি-বিধান নিয়ে চলতি বছরের ১৬ জুলাই পাস হয় এই নীতিমালা।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নীতিমালার প্রাথমিক বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ করাসহ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব রেখে নীতিমালাটি অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তবে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওই শর্তের ওপর কোনো সংশোধনী ছিল না।

এ অবস্থায় দেশীয় উদ্যোক্তারা এটিকে স্বাগত জানালেও দারাজের মতো বিদেশি বিনিয়োগের ই-কমার্স কোম্পানি চ্যালেঞ্জে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্টদের দেনদরবার ও দেশের বিনিয়োগ নীতির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলে। শেষে দেশের জাতীয় বিনিয়োগ নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এটি সংশোধনের প্রস্তাব করে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ।

এদিকে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার বিদেশি বিনিয়োগের এই নীতির সংশোধনে আপত্তি তুলেছে বিসিএস, বেসিস, ই-ক্যাব ও বাক্যসহ কয়েকটি সংগঠন।

ইতোমধ্যে সংগঠনগুলো ১৯ আগস্ট এক সভা করে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তির কথা জানিয়েছে।

ওই সভায় বিসিএস সভাপতি সুব্রত সরকার বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শুধু বিদেশি পণ্যগুলো তাদের ইচ্ছেমতো মূল্যে বিক্রি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাগুলো কুক্ষিগত করবেন। এতে দেশীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে শতভাগ ইকুইটি প্রদান করা হলে তারা এদেশ থেকে মুনাফা পাচার করার সুযোগ পাবে।

‘ভারতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্সে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশীয় নীতি পরিপূর্ণভাবে মেনে দেশে ব্যবসা করতে হবে। কোনো মতেই এককভাবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা করার সুযোগ নেই।’ সভায় বলছিলেন ই-ক্যাব মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।

সংগঠনগুলো শিগগিরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এই আপত্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেবে বলে ওই সভায় জানানো হয়।