ধুমকেতুর ইঞ্জিন নষ্টে নিয়ে আসলো চিলাহাটি, পরীক্ষার্থীরা দিল পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। দুপুর সাড়ে ৩টার শিফটের পরীক্ষার্থীদের দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমোটিভ খুলে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসকে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।

অসীম কুমার তালুকদার লিখেছেন, ‘৫ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তি যুদ্ধ বলা যেতে পারে। প্রায় ৭০০ ছাত্রছাত্রী আজকে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকেল সাড়ে ৩টার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। রেল ব্রোকেনের জন্য ধূমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়। সকাল ১১টায় হিসেব করে দেখা গেল, ট্রেনটি বিকেল ৩টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রেনটি অন্য ট্রেনগুলোকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম।

তিনি লেখেন, ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেইল করে, চাকা ঘুরছে না। কী করা যায়, কী করা যায়। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন আবার চালু করলাম। হিসেবে করে দেখলাম, ট্রেনটি বিকেল ৪টায় রাজশাহী পৌঁছাবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। মাননীয় ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পেছানোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে প্রায় ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন।’

‘ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে, দুশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্ত না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাস করলাম। ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোড়ে জোড়ে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানতও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে। হলে ঢুকতে হবে ৪টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম, ছেলেমেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেওয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষণিক ভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম (পাকশী)। এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।’