নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই:
নওগাঁর আত্রাইয়ে শুঁটকি তৈরিতে এখন চরম ব্যস্ত সময় কাটছে ব্যবসায়ীরা। এলাকা জুড়ে এখন শুধু শুঁটকি তৈরীর ধুম পড়েছে। এবার এলাকা জুড়ে বন্যায় বিভিন্ন পুকুর – পুস্কুনি পানিতে ডুবে যাওয়ায় মাছের বিচরণ অনেক বেশি। তাই জলাসয়গুলোতে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির অনেক রকমারী মাছ।
আর এ মাছগুলো প্রতিদিন সেই কাকডাকা ভোর থেকে বিক্রি হচ্ছে আত্রাইয়ের ঐতিহ্যবাহি মাছ বাজার রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন মাছের আড়তে। এসব মাছ কিনে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন শুঁটকি ব্যবসায়ীরা।
গত বছর এলাকায় বর্ষার পানি না হওয়ায় দেশীয় প্রজাতির মাছ প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। এ জন্য শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের শিকার হয়ে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার তারা কোমর বেঁধে শুঁটকি তৈরিতে ঝেঁপে পড়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানাযায়, উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত স্থান সমূহের মধ্যে আত্রাইও একটি খ্যাত স্থান। প্রতিদিন শত শত টন মাছ আত্রাই উপজেলা থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। সে অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট প্রসিদ্ধ রয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের প্রায় ২০/২৫ জেলাতে বাজারজাত করা হয় আত্রাইয়েয়র শুঁটকি মাছ। আর এ মাছের শুঁটকি তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ প্রায় শতাধিক পরিবার। উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুঁটকি তৈরীতে বিশেষভাবে খ্যাত। এ গ্রামে শতাধিক শুঁটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরী করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণ পোষন নিশ্চিত করেন।
কিন্তু গত বছর বাজার মন্দা থাকায় এসব শুঁটকি ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কাঁচা মাছের আমদানী কম, বাজারে মূল্য বেশি, অথচ শুঁটকির বাজারে ধস। সব কিছু মিলিয়ে তাদের গত বছরের চালান প্রতি লাভের স্থলে গুনতে হযেছিল অনেক লোকসান। কিন্তু এবার মাছের ব্যাপক আমদানী, মূল্য কম এবং শুঁটকি বাজার মূল্য বেশি থাকায় তাদের চোখে-মুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠেছে।
ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের বিশিষ্ট শুঁটকি ব্যবসায়ী মঞ্জুর মোল্লা সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, শুঁটকি ব্যবসার সাথে আমি দীর্ঘদিন থেকে সম্পৃক্ত। শুঁটকি তৈরীতে অর্থ খরচের সাথে সাথে যথেষ্ট শ্রম ব্যয় হয়।
শুঁটকি ব্যবসায়ী রাম, মাজেদুল, পচু, গেদা ও ছাত্তার বলেন, সর্বপোরি আমরা রৌদ্র বৃষ্টি ও মাছের র্দুগন্ধ সবকিছুকে উপেক্ষা করে পরিবার পরিজন নিয়ে এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্রাইয়ের শুঁটকির চাহিদা আছে। এবারের ব্যবসাটা লাভজনক হবে বলে আমরা আশাবাদি।
এ বিষয়ে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হলে এ শুটকি দেশের চাহিদা পূরন করে বিদেশে রপ্তানি করা গেলে প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সঙ্গে সঙ্গ দেশের শুঁটকি শিল্পে বিপুলসংখ্যক এ উপজেলার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে।
স/অ
