‘অশনি’র মধ্যেও কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কক্সবাজারেও সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর মধ্যেও জেলাটিতে অবস্থান করছেন লাখো পর্যটক।

সোমবার দুপুরে  কক্সবাজার সৈকতে দেখা যায়, সাগর কিছুটা উত্তাল থাকলেও তা উপেক্ষা করে কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা, লাবণী ও কলাতলী পয়েন্টে উৎসব উল্লাসে মেতে উঠেছেন লাখো পর্যটক। এসব পর্যটক সোমবার ভোরেই কক্সবাজারে এসেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় ঢাকার উত্তরার গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শামসুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, পরিবারের ৯ জন সদস্য নিয়ে সোমবার সকালে কক্সবাজারে এসেছেন। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব বাংলাদেশে তেমন একটা পড়বে না এমন ধারণা থেকেই কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন বলে জানান তিনি।

সিলেট থেকে আসা পর্যটক দম্পতী আবু আহমেদ ও হুমাইরা আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির খবর জানলেও সৈকতে লাখো পর্যটকের উপস্থিতি এটি আর আমাদের মনে নেই। বরং তীব্র গরমের মাঝে  ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে এক পশলা বৃষ্টি, অন্যরকম ভালো লাগার একটা আবহ এনে দিয়েছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকরা জানিয়েছে, সোমবার অন্তত লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। পর্যটকদের বড় একটি অংশ এসেছে সোমবার ভোরে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ঈদের পর পর্যটক আসা কিছুটা কমে গেছে। এরপরও সোমবার ৮০ হাজার থেকে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।  যার বড় একটা অংশ এসেছে সোমবার ভোরে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, এখনো কক্সবাজার পর্যটকে ভরপুর বললে চলে। সোমবারও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৪০-৫০ হাজারের মতো পর্যটক সৈকতে নেমেছেন।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত থাকায় পর্যটকদের হাঁটু পানির বেশি সৈকতে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। বারবার মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত চলছে।

কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমেদ বলেন, সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় অধিকাংশ মাছধরা ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। কেউ কেউ সমুদ্রতীরের বিভিন্ন ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। যারা এখনো ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত পায়নি, তাদের সংকেত পৌঁছে সতর্ক করার পাশাপাশি তীরে আনার চেষ্টা চলছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি রোধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেভাগেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে বিপুল পরিমাণ পর্যটক অবস্থান করায় সোমবার সকাল থেকে সৈকতেও মাইকিং করা হচ্ছে। কোনো পর্যটক যাতে পানিতে না নামেন সেজন্য বারবার সতর্ক করা হচ্ছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর