অন্ধকারে আলোর কণা

মহামারীর সর্বাত্মক বিস্ফোরণের আঁচ এখন আমরা বেশ টের পাচ্ছি। সামাজিক সংক্রমণের আভাস মিলছে, সেই সঙ্গে বৈশ্বিক মন্দার পদধ্বনি। তবুও এ কথা সত্যি যে, বৃহত্তর জনপরিসরে মানুষের ভাবলেশহীন আচরণ দেখে বোঝারই উপায় নেই- দেশ তথা বিশ্ব এক মহাসংকটে নিমজ্জিত।

স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাহ্য করার দৃষ্টিকটু চর্চা শঙ্কার পরিধিকে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। ভাবটা এমন যে, এ সমস্যা আমাদের নয়, বা অন্তত তা আমাকে স্পর্শ করবে না। বিপদ যখন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে, তখন ধরা পড়ে স্বার্থপরতার রুগ্ন চেহারা। একদিকে মানুষের অসচেতনতা, অন্যদিকে বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা। ব্যাপক জনগোষ্ঠী আক্রান্ত হলে- পরিস্থিতি কতটা নাজুক হতে পারে তা নিয়ে সংশয় ক্রমেই দানা বাঁধছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়ে বেশি উদ্বিগ্ন- তা হল আর্থিক মন্দা খাদ্য সংকটকে উসকে দিতে পারে। এখানেই হয়তো দেশ অন্যদের তুলনায় অনেকটাই ভারমুক্ত; আর তা নিশ্চিতভাবেই কৃষির বদান্যতায়।

১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর। ছাত্র-জনতার সমাবেশ। একটি আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন- চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদরাও ক্যাডার সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত হবেন। অন্যান্য ক্যাডারের সমমর্যাদা তারা ভোগ করবেন।

সদ্য স্বাধীন দেশগঠনে যাতে মেধাবী সন্তানরা উপযুক্ত সুযোগ ও সম্মান পায়, তা নিশ্চিত করতেই জাতির পিতা এ উদ্যোগ নেন। ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার সমাজে মর্যাদা পেয়েছে বটে; কিন্তু জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে কতটা সফল হয়েছে তা শুধু ভবিষ্যৎই নির্ধারণ করবে।

আমরা শুধু বলতে পারি- অসুখ হলে দেশের রোগীরা সীমানা পেরিয়েছে অবলীলায়। দেশীয় কোম্পানির ওষুধের ওপরও আমজনতার আস্থা কম। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা না হয় ছেড়েই দিলাম। অন্যদিকে ভবন, সেতু, রাস্তাঘাট এমনকি নদী খননের মতো কাজেও যদি জনগণের মতামত চাওয়া হয়- দেখা যাবে এক বাক্যে সবাই বলছে সশস্ত্র বাহিনী বা বিদেশিরা কাজ করলে কাজটা স্থায়ী হবে।

প্রমাণ আছে যোগ্যতায় এরা পিছিয়ে নেই, মূল্যবোধের রাজ্যে দেউলিয়াত্ব এদের অনেককেই এ জায়গায় নামিয়ে এনেছে। যেখানে ব্যতিক্রম কৃষক ও কৃষিবিজ্ঞানীরা; যারা গাঢ় আঁধারে এখনও আলো ছড়াচ্ছে।

ভৌগোলিকভাবেই এ জনপদের মাটি কৃষিবান্ধব। জলবায়ু ও প্রকৃতি কৃষিনির্ভর এ সংস্কৃতিকে লালন করেছে পরম মমতায়। স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে কৃষিজমির তেমন মূল্য ছিল না। উচ্চফলনশীল খাদ্যশস্য উৎপাদনে কৃষকের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কম ছিল। ঝিনাইদহের এক কৃষক গল্পের ছলে তার ৭ জনের সংসার চালানোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন।

৫ বিঘা জমিতে পাকিস্তান আমলে যে চাল তিনি ঘরে তুলতে পারতেন, তা দিয়ে ৬ মাস তার কোনোরকমে চলত। বাকি ৬ মাস অর্ধাহারেই কাটাতে হতো। আর এখন তিনি সে একই জমি থেকে হেসে-খেলে ৩০০ মণ ধান পান। ১৯৭২ সালে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি টন; যা আজ পৌঁছেছে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টনে।

স্বাধীনতা লাভের সময় আমাদের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সতেরো কোটি। খাদ্যে কোনো ঘাটতি তো নেই, বিপুল জনঅধ্যুষিত এ দেশ আজ উদ্বৃত্ত খাদ্য রফতানির জায়গায় পৌঁছেছে। শুধু খাদ্যশস্য নয়, সবজি উৎপাদনে আমরা এখন বিশ্বে তৃতীয়।

বছরব্যাপী শাকসবজির জোগান খাদ্যাভ্যাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পোলট্রি ও ডিম উৎপাদন অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সক্ষম। মাংস উৎপাদনে দেশ পঞ্চম। মিষ্টি পানির মাছে তৃতীয়।

নানা জাতের ফল-ফলাদির চাষ এখন ঘরোয়া পরিসরেই সম্ভব। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি, বৈরী জলবায়ু, অপরিকল্পিত নগরায়ণ অথবা শিল্পায়নের মতো প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই কৃষির এ জয়জয়কার।

বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন উদ্ভাবন আর কৃষকের শ্রম পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে মানানসই উচ্চফলনশীল শস্য উৎপাদনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করছে। কৃষি একদিকে জুগিয়েছে আহার, অন্যদিকে ঘুচিয়েছে দারিদ্র্য। সাহস দিয়েছে দুর্যোগ মোকাবেলার।

এ বিস্ময়কর পরিবর্তনের পটভূমি বিশ্লেষণ করতে গেলে আবার ফিরতে হবে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে। ৩০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি মাথায় নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর প্রথম অগ্রাধিকার ছিল কৃষি।

বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে থাকা বঙ্গবন্ধুর বুঝতে অসুবিধা হয়নি, এ দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য চাই আধুনিক কৃষির বিকাশ ও কৃষকের স্বনির্ভরতা। খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য তিনি সবুজবিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মাপ করেছিলেন।

জমি মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা ১০০ বিঘা বেঁধে দিয়েছিলেন। কৃষিঋণ বিতরণ, খাসজমি বণ্টন, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য বেঁধে দেয়া, সার-কীটনাশক বা কৃষি যন্ত্রপাতির দাম কৃষকের নাগালে এনে দিতে ভর্তুকি দেয়ার মতো যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

কৃষির আধুনিকায়নে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল- কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, কৃষি পারমাণবিক গবেষণা ইন্সটিটিউট, কৃষি ব্যাংক স্থাপন ও ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট পুনর্গঠন। আধুনিক কৃষি গবেষণা, সমবায় চাষ পদ্ধতি, ঋণের সহজীকরণ ও কৃষি ভর্তুকি প্রদানের ব্যবস্থা কৃষিবিপ্লবের ভ্রূণ সঞ্চার করেছিল। এভাবেই তৈরি হয়েছিল কৃষির অভূতপূর্ব সাফল্যের ভিত্তিভূমি।

বিগত দশকজুড়ে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়- চাল, গম, ভুট্টা, বোরো, আউশের বাম্পার ফলন যে কোনো অবস্থায় নির্বিঘ্ন থেকেছে। বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সামলে নিয়ে এ ফলন জারি রাখা নিঃসন্দেহে সক্ষমতার পরিচয়।

ফটকাবাজি বা মধ্যস্বত্বভোগী অসাধু ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যেই সুযোগ বুঝে সক্রিয় হয়ে উঠলেও কৃষি তার প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি নিয়ে এ কৃত্রিম বিপত্তিকে রুখে দিতে পেরেছে। সবুজবিপ্লবের ফলে জনসংখ্যার বর্ধিত চাপ কিংবা মহামারীর এ অপ্রত্যাশিত আগ্রাসনও খাদ্য নিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারেনি।

বিশ্বসভায় দেশের প্রশংসা হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশ সংকট মোকাবেলায় মডেল। অস্বীকার করার উপায় নেই, খাদ্যে স্বনির্ভরতা দুর্যোগ মোকাবেলায় নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

আর এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শী পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত যথেষ্ট কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি জোট সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রীর কৃষি ভর্তুকির পরিবর্তে আমদানি নীতির পরিণাম স্মরণ করা যেতে পারে।

২০০৬-০৭ সালে খাদ্য সংকট তীব্র হয়ে ওঠায় একটা সরকারকে শুধু বিব্রত হতে হয়নি, বিদায় নিতে হয়েছে। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে। আবার দুর্ভিক্ষও মহামারীকে অনুসরণ করে; কিন্তু দায় গড়ায় রাষ্ট্রের ওপর। ইতিহাস এমন সাক্ষীও হাজির করে।

দেশের অর্থনীতিতে প্রধান জোগান আসে কৃষি, শিল্প ও প্রবাসী আয় থেকে। দেশের জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। বলতে গেলে কৃষির পুরোটাই গ্রামীণ অর্থনীতিভিত্তিক। স্বাধীনতা লাভের সময় জিডিপির ৫৬ দশমিক ১ শতাংশ আসত কৃষি খাত থেকে।

কৃষির ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠী। এখন কৃষির দেশজ উৎপাদন প্রায় ১৪ শতাংশ।

দারিদ্র্যবিমোচনে অকৃষি খাতের তুলনায় কৃষি খাতের অবদান অনেক বেশি ফলপ্রসূ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ১ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধি পেলে শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাস পায়। এ অনুপাত অকৃষি খাতের তুলনায় তিন গুণ বেশি। কৃষি উৎপাদনের বিদেশ নির্ভরতা অনেক কম।

তাই কৃষি খাত চাঙ্গা হলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। আর এ সংকটকালে কৃষিই হতে পারে আশ্রয়। কেননা রফতানি বাণিজ্য কিংবা প্রবাসী কর্মসংস্থানের সব নিয়ামক আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, পক্ষান্তরে কৃষির সবটাই আমাদের হাতে।

ভুললে চলবে না যে, দেশের ২৫-৩০ লাখ প্রান্তিক মানুষ পোশাক শিল্পে কাজ করে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ নারী; যারা আজ বিপন্ন। বৈদেশিক শ্রমের ওপর নির্ভরশীল শ্রমিকের সংখ্যাও প্রায় ১ কোটি। এরাও আজ ঝুঁকিতে। সুতরাং শুধু তাৎক্ষণিক স্বস্তি পেলেই চলবে না, এখন একটা টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর নাগালে বিপন্ন জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আসাই সময়ের চ্যালেঞ্জ।

ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতা বিচারে দেশ আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম অর্থনীতি। অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রেও কৃষির ভূমিকা মুখ্য। শুধু তাই নয়, মানুষের খাদ্যাভ্যাসে গুণগত পরিবর্তন ঘটে গেছে। একটি সংস্থা বলছে- মাথাপিছু খাদ্যশস্য গ্রহণের পরিমাণ কমেছে।

সে জায়গায় যুক্ত হয়েছে দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল। অর্থাৎ ক্যালরি ইনটেক বেড়েছে। অপুষ্টি, বন্ধ্যত্ব, দৃষ্টিহীনতা, খর্বাকৃতির মতো উপসর্গগুলো এখন বিলুপ্ত প্রায়; যা সক্ষম জনশক্তির আকার গঠনে নিয়ামক হতে পারে।

বোরো ধান, আম, লিচু উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান কাটার কাজটাও হয়েছে সফলভাবে। যে পরিমাণ ধান ও খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে তাতে ৭-৮ মাস খাদ্যাভাব হবে না বলেই মনে হয়। নতুন করে বেকার হয়ে পড়া শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও কৃষিকে ঘিরে।

ফসল উৎপাদনের পরবর্তী সময়ে আমাদের আরও কিছু করণীয় থেকে যাচ্ছে। ফল-ফসলের প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বিতরণের শক্তিশালী কাঠামো দরকার। এসব বিস্তৃত ক্ষেত্রে নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টির অফুরন্ত সুযোগ আছে। কৃষি প্রযুক্তির সঙ্গে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের বৌদ্ধিক সমন্বয় গেম চেঞ্জারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।

করোনা বড় ধরনের আর্থিক মন্দার দিকে দেশকে নিয়ে যেতে পারে। প্রান্তিক ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী যেন কোনোভাবে অভুক্ত না থাকে তা দেখতে হবে। সেখানে খাদ্য নিরাপত্তাই বাঁচার চাবিকাঠি হতে পারে। এ অবস্থায় সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

খারাপ অবস্থার কথা মাথায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে হয়। তবে সতর্কতা প্রয়োজন। বাস্তব চাহিদা পরিমাপ করেই এ আমদানি করতে হবে। নইলে চাষী দাম পাবে না। মন্দাকে মোকাবেলা করতে হলে দ্বিমুখী প্রচেষ্টা দরকার।

একদিকে প্রযুক্তির সহযোগে উৎপাদন বৃদ্ধি, অন্যদিকে বণ্টন ও বাজার নিয়ন্ত্রণ। ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জরুরি। সমতাভিত্তিক খাদ্য বিতরণ প্রয়োজন। একদিকে চাষীকে ন্যায্যমূল্য দেয়া, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে যেন পণ্যমূল্য চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা।

প্রয়োজনে ভর্তুকি দিতে হবে। এ টাকা আবার জনগণের কাছেই ফিরে যাবে। অর্থ পাচারের ঝুঁকি এখানে নেই। সুইস ব্যাংকে টাকা গচ্ছিত হওয়ার সুযোগও কম। পক্ষান্তরে, খাদ্য ঘাটতি না থাকলে জনমনে স্বস্তি আসবে, শক্তি বাড়বে।

কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা মুখিয়ে। শিশুখাদ্যে বা জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল থেকে শুরু করে প্রতারণা, জালিয়াতি কোনো কিছুই বাদ নেই। এদের কোনো ধর্ম নেই, নীতি নেই, আদর্শ নেই। এসব তত্ত্বচর্চার জায়গা সুসজ্জিত মঞ্চ, যেখানে চলে শুধুই কথার ছড়াছড়ি।

পবিত্র রমজান মাস থেকে বিধ্বংসী মহামারী- কোথাও এদের এতটুকু ছাড় নেই। করোনা পরীক্ষায় জালিয়াতি এ অধ্যায়ের সাম্প্রতিক সংযোজন; যা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও আমাদের মুখ পুড়িয়েছে।

এসব দুর্নীতি, জালিয়াতির বিরুদ্ধে শুধু আইন নয়, প্রবল জনমত গড়ে তুলতে হবে। কোনো পক্ষকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করানোই শ্রেয় হবে। বুঝতে হবে- চূড়ান্ত বিচারে কারও কোনো লাভ অবশিষ্ট থাকে না। যেমন- অঢেল বিত্ত থাকলেও এখন বিদেশে ওড়ার সুযোগ নেই। চিকিৎসা দেশেই নিতে হচ্ছে। সরকার অনেক ভালো কাজ করেছে; কিন্তু এসব ছদ্মবেশীর জন্য তার সুফল শতভাগ মানুষের কাছে পৌঁছেনি; যা অন্তত কৃষির ক্ষেত্রে ঘটেনি।

অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ

principalffmmc@gmail.com

 

সুত্রঃ যুগান্তর