‘অনিয়ম করে নদীতে ড্রেজিং করা যাবে না’

নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে একই স্থানে ড্রেজিং করা হয়েছে। তা আর করতে দেওয়া হবে না। এখানকার স্থানীয় প্রশাসন অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করা বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীতে যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই নিয়ম মেনে ড্রেজিং করা হবে। অনিয়ম করে কেউ ড্রেজিং করতে পারবে না, সে যেকোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের হোক না কেন।

তিনি বলেন, নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় তার বক্তব্যে বলে থাকেন নদীমাতৃক বাংলাদেশ। তিনি সব সময় নৌপথের উন্নয়নে দৃষ্টি রাখেন। তার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় আমরা কাজগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

শনিবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পূর্বে দেশে ড্রেজার ছিল ৮টি। এরপর গত ১৩ বছরে ৪৮টি ড্রেজার আমরা সংগ্রহ করেছি। আরও সংগ্রহ করা হবে। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল দেশের ১০ হাজার কিলোমিটার নদী খনন। এখন পর্যন্ত ৭ হাজার কিলোমিটার খনন হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি খনন হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নৌবন্দরগুলো আধুনিক করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল ও ভোলায় বন্দর উন্নয়নে কাজ করা হবে। ইতোমধ্যে বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ বেশ কিছু বন্দরের কাজ আপডেট করেছি। আপনারা এখন চাঁদপুর থেকে সদরঘাট গিয়ে নামলে আগের চাইতে অনেক সুন্দর পরিবেশ পাচ্ছেন।

প্রতিমন্ত্রী যোগ করে বলেন, আগে বলা হতো উপর দিয়ে ‘ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট’ এখন তার বিপরীত সদরঘাট হচ্ছে ফিটফাট।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নানা কারণে চাঁদপুর নৌবন্দর অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আজকে অনুষ্ঠানে যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারা অনেকেই চাঁদপুরের পূর্বের এবং বর্তমান নৌবন্দরের ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। এখানে রেলপথ, সড়কপথসহ সার্বিক সুবিধা আছে। আপনাদের দাবি এখন একটি আধুনিক নৌবন্দর করার জন্য। ইতোমধ্যে এ কাজ অনেক এগিয়েছে। আমরা চাঁদপুরে একটি আন্তর্জাতিক নৌবন্দর নির্মাণ করব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এজেডএম জালাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল।

বক্তব্য রাখেন- চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে নৌযান মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন নৌযান সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে সুবর্ণতরী নামে একটি স্যুভেনিয়র উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিরা।

গত ১৯ মে থেকে সপ্তাহব্যাপী নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহের উদ্বোধন হয় ঢাকার সদরঘাটে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এছাড়া নৌ-র‌্যালি, দেশের বিভিন্ন নৌবন্দরে ব্যানার ও পোস্টার প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ জলযান, নৌ-নিরাপত্তায় রাখবে অবদান’।

 

সুত্রঃ যুগান্তর