নিশ্চিন্ত মনে গ্রহণ করুন তিলাপিয়া মাছ

তিলাপিয়া একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুন সম্পন্ন এবং পরিবেশবান্ধব মাছ,যার কারণে সারা বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ তিলাপিয়া মাছের উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে, এশিয়ার ভেতরে অবস্থান ৩য়। মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তিলাপিয়া মাছের উৎপাদন ছিল ৩৯০৫৫৯ মেট্রিকটন, যা দেশের মোট মাছ উৎপাদন এর ১০.৪৯%।

তিলাপিয়া মাছ নিয়ে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়ে থাকে, যার কারনে অনেকের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে তিলাপিয়া মাছ স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। আমেরিকায় গবেষণা করেছিল তিলাপিয়া মাছের উপর। আর এটি চিনের তেলাপিয়া মাছ চাষের উপর। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তিলাপিয়া চাষ হয় চিনে। এবং এখান থেকে আমেরিকায় বেশি মাছ রপ্তানি হয়। চিনে এই মাছ চাষে খাদ্য হিসাবে মুরগির,শুকুর,গরুর ভূরি ব্যবহৃত হয়। এর ফলে আমেরিকার গবেষকরা এটি না খাওয়ার প্রতি নিরউৎসায়িত করেন।

কিন্তু বাংলাদেশের তিলাপিয়া মাছ শতভাগ নিরাপদ। এই মাছ গ্রহণের জন্য কোন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নেই।কোন ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান নেই বিধায় নিশ্চিন্ত ভাবে এই মাছ গ্রহন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর গবেষণায় তা ইতোপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফিস এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মহিলা, শিশু এবং বয়স্ক সকলের জন্য তিলাপিয়া মাছ খাওয়া ভাল। ইহা স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং বিকাশকে সমর্থন করে, হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং মস্তিষ্কের ভাল ক্রিয়ায় অবদান রাখে।এই মাছে রয়েছে ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন ডি, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড, পটাসিয়াম,ফসফরাস,সেলেনিয়াম এর মত পুষ্টিগুন সম্পন্ন উপাদান।তাই,পরিমিত আমিষ এর চাহিদা মিটিয়ে শরির সুস্থ রাখতে পরিমিত তিলাপিয়া মাছ গ্রহন একটি সুন্দর সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে।

 

মোহা: আতিক আশহাব

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ(৩য় বর্ষ), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।