লাদাখে ভারতের কৌশলী জবাবে ‘চোরাবালিতে’ আটকে গেছে চীন

লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) চীনের ‘সীমা লঙ্ঘনের চেষ্টায়’ ভারতের তেজস্বী, কৌশলী এবং দৃঢ় জবাবের কারণে নিজের তৈরি ‘চোরাবালিতে’ আটকে গেছে বেইজিং। এ থেকে বেইজিং সহজে বের হতেও পারছে না, আবার দীর্ঘ সময় এখানে আটকেও থাকতে পারছে না।

ইউরোপ ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস) সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করেছে। ইএফএসএএস বলেছে, শুধু দক্ষিণাঞ্চলের প্যাংগং সো নয়, উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে ভারত, যা বেইজিংকে বিপাকে ফেলেছে।

গত কয়েক দিন ধরে প্যাংগং সো এলাকায় কিছু ঘটনা ঘটায় এবং দৃশ্যমান ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও দু’টি দেশের (ভারত ও চীন) বিবৃতি থেকে মনে হয়ে, তারা যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে যেটা উভয় দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জাতীয় ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যতেষ্ট পরিমাণে দক্ষতাপূর্ণ আলোচনার প্রয়োজন। তবে এ সংঘাতে ভারত কৌশলগত ভাবে ভিন্ন উচ্চতায় রয়েছে, যা চীনের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কোনো চুক্তি হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়কালটা অত্যন্ত সংবেদনশীল। এসময়ে অনাকাঙ্খিত অনেক ঘটনা ঘটার সম্ভাব্য উপাদানগুলো উপস্থিত রয়েছে। ফলে এ সময়টায় উভয় দেশকে সজাগ এবং দায়িত্বশীল থাকা উচিত।

এরই মধ্যে ভারত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, চীন শুধু প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীর নয়, বরং উত্তর তীরেরও কিছু কৌশলগত এলাকা দখল করে নিয়েছিল। তবে ভারতীয় বাহিনী চীনা সেনাদের সেই এলাকা থেকে হটিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে কৌশলগতভাবে নিজেদের অবস্থান অনেক শক্তিশালী করেছে ভারত। ভারতীয় বাহিনীর এমন দৃঢ়তাপূর্ণ পদক্ষেপ চীনকে অবাক করেছে বলে ইএফএসএএস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এপ্রিল মাস থেকেই এলএসির ভারতীয় অংশে গুপ্ত আক্রমণ চালিয়ে আসছে চীন। তবে ভারতের কাছ থেকে এমন পাল্টা জবাব প্রত্যাশা করেনি দেশটি। ভারতীয় সেনাদের তেজস্বী এবং কৌশলী জবাবের কারণে এখন নিজের তৈরি চোরাবালিতে আটকে গেছে চীন। এ থেকে দেশটি সহজে বের হতেও পারছে না, আবার দীর্ঘ সময় এখানে আটকেও থাকতে পারছে না।

কিছু আন-অফিসিয়াল প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) রাতের আঁধারে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরের অধিক উচ্চতা সম্পন্ন আরেকটি জমি দখলের চেষ্টা করেছিল, যা তাদের একটি কার্যকর সুবিধা দিতে পারত। তবে ভারতীয় বাহিনীর দৃঢ়তায় সেটাও সম্ভব হয়নি।

২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লাদাখের প্যাংগং লেকে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে ভারত ও চীনের সম্পর্ক এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে দেশ দু’টির বিভিন্ন বিবৃতি থেকেই তা বোঝা যায়।

উভয় দেশই সমঝোতার মাধ্যমে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার কথা বললেও ১৫ জুনের গালওয়ান সংঘর্ষ থেকে বোঝা যায় যে, সমঝোতা এত সহজে হবে না।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ