গোদাগাড়ী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দিনে সাড়ে ৩ বছরের শিশু তামিমকে অপহরণের পর রাতে বাড়ির মাচার নিচে মিললো লাশ। ঘটনাটি শুক্রবার রাতের।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আশে পাশে ও দূর দুরান্ত হতে লোকজন শিশুটির লাশ দেখার জন্য ভীড় জমিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা রেলগেট বাইপাস এলাকায়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু তামিমের বাবা মোঃ রাসেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে আমি কাজের জন্য বাড়ি হতে বের হয়ে যান
তখন তার ছেলে বাসায় ছিলো। পরে ছেলে খেলাধুলার জন্য বাড়ি হতে বের হয়। তার একটু পরেই শিশু তামিমের মা তাহেরা বেগম নিজ সন্তানের খোঁজ করতে থাকেন। সারাদিন আশে পাশে খুঁজে কোথাও না পেয়ে বাবা রাসেলকে জানালে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ আশেপাশের পকুরেও খোঁজখুঁজি করা হয়। বিকেলের পর হতে শিশুটিকে পাবার জন্য মাইকিংও করা হয়।
রাতে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলতাফ হোসেনকে অবগত করে।
এই ভাবেই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় কেটে যায় শিশু তামিমের পিতা-মাতা সহ আত্মীয় স্বজনদের।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শিশু রাসেলের ফুফু রুবিনা খাতুন
বাড়ির পাশে মাচার নিছে শিশু তামিমের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর জানাজানি হয় বিষয়টি।
তামিমের ফুফু বলেন, মাচার নিচে টচ লাইট জ্বালিয়ে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় মাচার নিচে দেখলে সবুজ জ্বাল মড়ানো কিছু জড়সড়ো দেখতে পাই। সেই জালটি সামান্য সরাতেই শিশু তামিমের পা দেখতে পাই। পরে সেটি পুরোপুরি বের করলে শিশু তামিমের লাশ সেখান হতে উদ্ধার করে।
শিশু তামিমের পিতা রাসেল আরো জানান, আমার ছেলেকে পাওয়ার পর দেখি মাথার মধ্যেখানে আঘাতের চিহৃ। চিহৃ দেখে মনে হচ্ছে ইটের আঘাত কিংবা লোহার কাটাদিতে মাথার মধ্যে আঘাত দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ছেলেকে উদ্ধারের সময় গলায় দড়ি ও শরীরে গাছের ছাল জড়ানো ছিলো বলে জানান।
তামিমের পিতা ও চাচার কথা, শিশুতো কোন অপরাধ করতে শিখেনি বা কারো ক্ষতি করেনি। তবে কেন নিষ্পাপ এই শিশুর প্রতি এমন চরম অন্যায় ? যেহেতু কোনো লোক বা কারা এমন করেছে নিজে দেখিনি বা জানতেও পারিনি, তাই কি করবো বুঝতে পারছি না। তবে বিষয়টি গোদাগাড়ী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে তামিমের পিতা রাসেল জানান।
এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলতাফ হোসেন বলেন, শিশু হত্যার বিষয়টি জানতে পেরেছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে তারা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, শিশু তামিমের পিতা একজন দিনমজুর। কখনো অটো চালিয়ে আবার কখনো রাজমিন্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার সঙ্গে কারো শত্রুতাও নাই। কিন্তু তার শিশুর প্রতি এমন আচরন বড় অন্যায় যেই হোক না কেন প্রকৃত অরাধীকে বের করা উচিত। তা না হলে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে বলে জানান। এলাকাবাসীর ধারনা আশে পাশের লোকজনই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে রাতের আধারে লাশ ফেলে রেখে গেছে। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
স/আর