৬ হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সামনেই বৃদ্ধের মৃত্যু

মাথায় আঘাত পেয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ নিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধ হাজী মো. এনায়েত উল্যাহকে (৭২) তার পরিবার ঢাকা মেডিকেলসহ ৫ হাসপাতালের পর সর্বশেষ মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পায়নি। অবশেষে স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও জামাতার চোখের সামনে তার মৃত্যু হয়।

এমন শর্তের কারণে আর ওই বৃদ্ধাকে ভর্তিতে রাজি না হয়ে রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল গেটে প্রাইভেটকারে উঠার পর তার শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পরে। এ সময় রোগীর স্ত্রী, সন্তানরা ডাক চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘অ ডাক্তার সাহেব, একটু আসেন’, ‘দয়া করে একটু আমার বাবাকে বাঁচান, আমার বাবা মরে যাচ্ছে’। প্রায় ২০ মিনিট যাবৎ উচ্চস্বরে ডাক চিৎকার দিয়ে ডাক্তারদের ডাকার পরও কোনো ডাক্তার এমনকি একজন নার্সও আসেননি। এক পর্যায়ে কোনো চিকিৎসা না পেয়েই বৃদ্ধ মারা যান। পরে লাশ নিয়ে ডেমরার বাসায় চলে যান স্ত্রী ও সন্তানরা।

এদিকে আরেক রোগী নুরে আলম (৪৬)। তিনি বুকে প্রচুর ব্যথা নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টায় চিকিৎসা নিতে আসেন মুগদা জেনারেল হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের লোকজন কিছু ওষুধ লিখে তাকে বাসায় চলে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি বারবার তাদেরকে অনুরোধ করে বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা খুবই শঙ্কটাপন্ন। আমাকে হাসপাতালে ভর্তি দেন। তাতেও তাকে ভর্তি দিতে নারাজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের লোকজন।

এক পর্যায়ে যুগান্তরের সাংবাদিক জরুরি বিভাগের লোকজনের কাছে জানতে চান কী কারণে এ রোগীকে ভর্তি দিতে চান না তারা? জবাবে তারা বলেন, এ হাসপাতালে এখন শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা হয়। সে কারণে তাকে ভর্তি দেয়া হচ্ছে না।

এ রোগী তো করোনা রোগীও হতে পারেন? গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের পর অবশেষে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে শর্ত দেয়া হয় মারা গেলে আঞ্জুমান মফিদুলে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এমন শর্ত মেনেই রোগী নুরে আলম নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

কতজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কতটি সিট আছে, করোনা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যাদি জানতে চাইলে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন থেকে জানতে বলেন। সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। সূত্র: যুগান্তর