দুর্গাপুরে রাতের আকাশে উড়ছে ঘুড়ি, জ্বলছে রঙিন বাতি

গোলাম রসুল, দুর্গাপুর:
রাজশাহী দুর্গাপুরে রাতের আকাশে উড়ছে শত শত আলোকিত ঘুড়ি। ঘুড়িগুলোর মধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা রঙের এলইডি বাতি। উপজেলার পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের সকল এলাকার ঘুরে দেখা গেছে এমন ঘুড়ি উড়ানো চিত্র। গত এক মাস যাবত ছোট-বড় সব বয়সের মানুষ এখন ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। করোনার মধ্যে এই ঘুড়ি ওড়ানোর দৃশ্য রাতের প্রকৃতিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। অনেকে বলছেন, মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন যেন করোনামুক্ত ভোরের বার্তা এনে দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, এমন শত শত ঘুড়ি আগে কখনো ওড়াতে দেখেনি তারা, তাও আবার রাতের বেলা। আগে ঘুড়ি ওড়ানো হতো দিনে। এখন দেখছি রাতের আকাশে শত শত ঘুড়ি ওড়ানোর হচ্ছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে আকাশের তারাগুলো বুঝি নিচে নেমে এসেছে।
কলেজ শিক্ষার্থী সোহেল রানা জানান, সবাই ঘুড়ি ওড়াচ্ছে তাই আমরাও তাদের দেখাদেখি (উড়োজাহাজ) ঘুড়ি বানিয়ে ওড়াচ্ছি। সবাই মিলে অনেক মজা করছি। বাঁশ কেটে নিজেরাই ঘুড়ি তৈরি করেছি। ঘুড়িতে রয়েছে ৮০টি ছোট ছোট বিভিন্ন রঙের এলইডি বাতি যা মোবাইলের ব্যাটারির সাহায্যে জ্বলছে রঙিন বাতি। তার ওই ঘুড়িটি তৈরীতে খরচ হয়েছে ৫শ’ টাকা।
পৌর এলাকার সিংগা গ্রামের ঘুড়ি বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, করোনা কালে কাজ না থাকায় তিনি গত এক মাস থেকে বিভিন্ন প্রকারের ঘুড়ি তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। তার এই ঘুড়ি ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ তাদের ইচ্ছেমত বানিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিটি ঘুড়ি তৈরিতে খরচ হচ্ছে ২০০ থেকে ১২০০ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে চিল ঘুড়ি, কোয়াড় ঘুড়ি, দৌলচং ঘুড়ি ও সাপাঘুড়ি। একটি বড় ধরনের ঘুড়ি তৈরিতে সময় লাগে দুইদিন। আর তৈরিতে লাগে তল্লা বাঁশের বাতা,সুতা,পলিথিন,এলইডি বাল্প ও ব্যাটারী।
বহরমপুর গ্রামের হবি বলেন, প্রতিদিন ‘সন্ধ্যার পর ঘুড়ি উড়িয়ে দিই আকাশে। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়, কার ঘুড়ি কত সুন্দর দেখায় এবং কত উপরে ওঠে। সে জন্য যে যার মতো আলোকসজ্জা করে ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে দিই।
দুর্গাপুর কলেজের প্রভাষক আমিনুল হক টুলু বলেন, আগে দেখতাম শিশু কিশোররা দিনের বেলাতে ঘুড়ি উড়াতো। এই করোনা পরিস্থিতিতে সময় কাটানোর জন্য রাতের আকাশে তারা ঘুড়ি উড়াচ্ছে। তাদের দেখে বড়রাও ঘুড়ি উড়ানোর কাজে এগিয়ে এসেছেন। এমন দৃশ্য আগে দেখা যায় নি। হালকা বাতাসে দিন-রাতে আকাশে উড়ছে শত শত ঘুড়ি। যে কাউকে এই দৃশ্য মুগ্ধ করবে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে তারা। আমরা চাই, আমাদের শিশু-কিশোররা এবং যুবকরা এমন সুস্থ বিনোদনের মধ্য দিয়ে এই করোনাকে জয় করুক।
স/আর