১৮ ঘণ্টা পর সাংবাদিক ফজলে এলাহীর জামিন

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

গ্রেফতারের ১৮ ঘণ্টা পর জামিন পেলেন রাঙামাটির সাংবাদিক ফজলে এলাহী। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার পরোয়ানা জারি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের এডিসি হিলের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হলে তার পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। আবেদন জামিনযোগ্য বিবেচনা করে ফজলে এলাহীর জামিন মঞ্জুর করেছেন রাঙামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচার ফাতেমা আক্তার মুক্তা।

ফজলে এলাহী দৈনিক কালের কণ্ঠ ও এনটিভির রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক। তার জামিন মঞ্জুর করায় আদালতের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ।

জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী মোক্তার আহমেদ বলেন, আমরা জামিনের আবেদন করেছি। আবেদনে জামিনযোগ্য বিবেচনা করে ফজলে এলাহীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এজন্য আদালতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি কবির হোসেন জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ারেন্ট হাতে পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফজলে এলাহীকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।

জানা যায়, প্রকাশিত একটি সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে রাঙামাটির সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু এবং তার মেয়ে নাজনীন আনোয়ার ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগ দুটি তদন্তের অনুমতি চাইলে আদালত অনুমতি দেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম থেকে সাইবার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা হয়।

এদিকে জামিনের আগে বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ফজলে এলাহীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাঙামাটির সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ।

এ সময় রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সুনীল কান্তি দে, রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ললিত সি চাকমা, খাগড়াছড়ির সাংবাদিক আবু দাউদ, রাঙামাটির সাংবাদিক সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, নির্মল বড়ুয়া, প্রান্ত রনিসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। এ সময় তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফজলে এলাহীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হুমকি।

এছাড়া সাংবাদিক ফজলে এলাহীকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ তার মুক্তির দাবি জানান ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সহ-সভাপতি নতুন কুমার চাকমা। বুধবার পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তিনি।

এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফজলে এলাহীকে গ্রেফতার স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার ও মুক্ত সাংবাদিকতার ওপর এক নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সংবাদ মাধ্যমের ওপর একটি বিশেষ মহলের অঘোষিত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যার কারণে এখানে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার চরমভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনাও ঘটছে।

সূত্র: যুগান্তর