হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখর কামারশালা

ঘামছে কামার, পুড়ছে লোহা, তৈরি হচ্ছে দা, ছুরি ও বঁটি। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও স্থানটি ছিল প্রায় নীরব। ঈদুল আজহা সামনে রেখে হাতুড়ি পেটার ঠুকঠাক ও টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে কামারশালাগুলো। হাতুড়ির টুং টাং শব্দ যেন আর থামছে না।

কয়েক দিনে এমন ব্যস্ততা বেড়েছে হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলার প্রতিটি কামারের দোকানে।

সরেজমিন দেখা যায়, পৌরসভার অধিকাংশ বাজারে কর্মকাররা পশুর মাংস কাটাকাটি আর চামড়া ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত দা, ছুরি, বঁটিসহ কিছু ধারালো জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এসব জিনিস চাহিদামতো সরবরাহে কামার শিল্পীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা দিবারাত্রি অবিরত ছুরি, চাকু, বঁটি ও দা তৈরি করছে। তবে এসব তৈরিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। সেকেলে পুরনো নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো ছুরি, চাকু, বঁটি ও দা তৈরির কাজ।

এ ক্ষেত্রে লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৫০০ টাকা, নরমাল ৩০০, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৫০-২০০ টাকা, দা ২৫০-৩০০ টাকা, বঁটি ৩৫০-৪০০ এবং পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০-১১০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান কামাররা।

এ ছাড়া বিভিন্ন সাইজের দা, ছুরি লোহার ওজনের ওপর ভিত্তি করেও বিক্রি করা হচ্ছে। ছোট ছুরি থেকে শুরু করে বড় কিরিচ, ধামায় শান দেয়ার জন্য ৪০ টাকা থেকে কাজের গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে ১৮০ টাকা পর্যন্ত, ছুরি ৫০ থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে।

পৌর এলাকার কাছারি রোডের মাইকেল দে নামে এক কর্মকারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, পৈতৃক সূত্রে এ পেশায় আসা। দীর্ঘ ২৫ বছরে এ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন। কোরবানি এলে কাজ বাড়ে। তবে অনেক গ্রাহক সঠিক মূল্য দেন না।

এর মধ্যে করোনাকালে ক্রেতা সমাগম বিগত বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম। তার মধ্যে উচ্চমূল্যে কয়লা, লোহা ও স্টিলের মালামাল কিনে ক্রেতা কম থাকায় বিনিয়োগকৃত পুঁজি উঠানো নিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছি।

 

 

সুত্রঃ যুগান্তর