রবিবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট প্রদানে ইসলামী শিক্ষা

Paris
ডিসেম্বর ২৭, ২০২০ ৭:০০ অপরাহ্ণ

দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌরসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। কোথাও ২৮ ডিসেম্বর আর কোথাও কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়ার বিষয়ে ইসলাম বিশেষভাবে নির্দেশনা প্রদান করেছে।

অপর দিকে জেনে শুনে অসৎ, অযোগ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ প্রার্থীকে ভোট দিলে তার পরিণাম যে অত্যন্ত ভয়াবহ সে সম্পর্কেও অবহিত করা হয়েছে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আমাদের ওপর বিশেষ এক আমানত হচ্ছে ভোট। তাই এ পবিত্র আমানতের হেফাজত করা প্রত্যেকের জন্য এক আবশ্যকীয় দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের আমানতসমূহ এর যোগ্য ব্যক্তিদের ওপর ন্যস্ত করার আদেশ দিচ্ছেন আর তোমরা যখন শাসনকাজ পরিচালনা কর, তোমরা মানুষের মাঝে ন্যায়পরায়ণতার সাথে শাসন করবে। নিশ্চয় আল্লাহর উপদেশ কতই চমৎকার। (সুরা আন নেসা, আয়াত: ৫৮)।

এই আয়াতে শাসনক্ষমতা বা কর্তৃত্বকে জনগণের আমানত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচন করা খুব প্রয়োজন।

ভোট যেহেতু আমানত, এর জন্য ভোটারদের দৃষ্টিতে যে ব্যক্তি সর্বোত্তম, তার পক্ষে ভোট দেয়ার শিক্ষাই ইসলাম দান করে। সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেয়া যেমন অধিক পুণ্যের কাজ, তেমনি অসৎ, অনুপযুক্ত, দুষ্কৃতকারী কোন ব্যক্তিকে ভোট দেয়াও শক্ত গুনাহের কাজ।

যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। শাসন কাজে তারা জনগণের সাথে নম্র আচরণ করবে, তাদেরকে ভালোবাসবে, তাদেরকে সদুপদেশ দিবে এবং তাদেরকে প্রতারিত করবে না, কঠোরতা প্রদর্শন করবে না, তাদের কল্যাণ সাধনে ও প্রয়োজন পূরণে অমনোযোগী হবে না।
জনগণের সুখে দুঃখে, বিপদে-আপদে তারা যদি পাশে এসে দাঁড়ায়, তাহলে তারা যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে তেমনি প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা হবে সফল।

এ বিষয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘বস্তুত আল্লাহ তোমাদেরকে ন্যায়বিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দান করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি নিষেধ করছেন অশ্লীলতা, অন্যায় কাজ ও সীমা লংঘন করা। আল্লাহ তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো’। (সুরা নাহল, আয়াত: ৯০)

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব সম্পর্কে হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে।

যেমন হজরত আবু ইয়ালা মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মহানবীকে (সা.) বলতে শুনেছি, আল্লাহ তার কোনো বান্দাকে প্রজাসাধারণের তত্তাবধায়ক বানাবার পর সে যদি তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে, তবে সে যেদিনই মরুক, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন। (বোখারি ও মুসলিম)

জনপ্রতিনিধিদেরকে সতর্ক করে রাসুলপাক (সা.) আরো বলেছেন, ‘তোমরা সাবধান হও! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ (বোখারি)।

আবার যারা ন্যায়ের সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তাদের জন্য শুভ সংবাদও রয়েছে।

যেমন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় সেসব ন্যায়বিচারক আল্লাহর নিকট নূরের মিম্বরে আসন গ্রহণ করবে, যারা বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে তাদের পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে এবং যেসব দায়দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পিত করা হয় সে সব বিষয়ে সুবিচার করে’ (মুসলিম)।

এছাড়া শাসকের আনুগত্যের বিষয়েও ইসলামে বিশেষ নির্দেশ রয়েছে। শাসকের ত্রুটিমুক্ত সকল নির্দেশের আনুগত্য করার শিক্ষা আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে দান করেছেন।

আল্লাহপাক বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, আনুগত্য কর রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বশীল তাদের’ (সুরা আন নেসা, আয়াত: ৫৯)।

বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, ‘শাসকের নির্দেশ শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য তা তার পছন্দ হোক বা অপছন্দ, যতক্ষণ পর্যন্ত না পাপাচারের আদেশ দেয়া হয়। পাপাচারের আদেশ দেয়া হলে তা শ্রবণ করা ও তার আনুগত্য করার কোনো অবকাশ নেই’ (বোখারি ও মুসলিম)।

আমাদের উচিত হবে, এই আমানত আমাদেরকে যোগ্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা, যাতে তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারেন।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

 

সুত্রঃ যুগান্তর

সর্বশেষ - ধর্ম