স্পটলেস সান ডেকে আনবে মিনি বরফযুগ!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

এক শতকের বেশি সময়ের মধ্যে বর্তমানে সূর্য সবচেয়ে বেশি শান্ত সময় পার করছে। চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো ভেনকোর ওয়েদার দাবি করেছে, সূর্য কিউ বল মাডে রয়েছে। এবার নাসার তোলা ছবিতে সূর্যপৃষ্ঠে বড় কোনো সানস্পট দেখা যায়নি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। ১১ বছরের চক্রে সৌর কার্যকলাপ পরিবর্তন ও হ্রাস পায়। এখন আমরা রয়েছি ২৪তম চক্রে। এটি শুরু হয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। স্পটলেস সানের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে পৃথিবী একটি ছোট বরফযুগের দিকে এগোতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বর্তমান ২৪তম চক্রে সবচেয়ে ছোট সানস্পট দেখা গেছে। সবচেয়ে বড় সানস্পট ছিল ১৯০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৪তম চক্রে। জুনের ৪ তারিখ সূর্য সম্পূর্ণ স্পটলেস ছিল। চার দিন ধরে তার কার্যকল‍াপ ছিলো খুবই নিম্ন। ভেনকোর ওয়েদার লিখেছে, স্পটলেস সূর্য একটি সংকেত, যা নির্ধারণ করে কয়েক বছর পর আসন্ন সূর্য স্পটলেস দিনের সংখ্যা বাড়াবে।

 

প্রচণ্ড সৌরঝড়সহ বিগত ২৩তম সোলার সাইকেল হয় ২০০০-২০০২ সালে। সে সোলার ম্যাক্সের দিনগুলোতে, দৈনিক সর্বোচ্চ সময় বিশাল সানস্পট এবং তীব্র সৌর অগ্নিতরঙ্গ হয়েছে। অপরদিকে, সোলার মিনিমামের দিনগুলোতে হয় এর উল্টোটা। সৌর অগ্নিতরঙ্গ প্রায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। সূর্যের বুকে শূন্যতা ভেঙে জায়গা করে নেয় ক্ষুদ্র সানস্পট। যে অভিজ্ঞতা আমরা এখন পাচ্ছি।

 

সর্বনিম্ন সানস্পটের রেকর্ড রয়েছে ১৬৪৫ থেকে ১৭১৫ সালে। ৭০ বছর স্থায়ী ছিল একটানা। ওই সময় সানস্পট ছিল খুব বিরল এবং সৌরচক্র পুরো ভেঙে গিয়েছিল। শান্ত সময়ের সঙ্গে মিলে এসেছিল ছোট বরফযুগ। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে ধারাবাহিকভ‍াবে অস্বাভাবিক নেমেছিল শীত। অনেক গবেষকের বিশ্বাস, লো সোলার অ্যাকটিভিটি, আগ্নেয় ক্রিয়ার বৃদ্ধি ও সমুদ্র নকশার পরিবর্তন ১৭ শতককে শীতল রেখেছিল। গত বছরের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২০ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সৌরচক্র ভেঙে যেতে পারে। যা ১৬৪৬-১৭১৫ সালের মতো আরেকটি বরফযুগের সূচনা করতে পারে।

 

বিজ্ঞানীরা সূর্যের সৌরচক্রের একটি মডেল তৈরি করেছেন। মডেল পূর্বাভাস দিয়েছে ২০২২ সালের দিকে ২৫তম চক্রে সূর্যের সৌর তরঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। এরপর ২০৩০-২০৪০ সালে, ১০ বছরে সৌর কার্যকলাপ লক্ষণীয় হারে কমবে। এ সময় দুটি সৌর তরঙ্গ সূর্যের দুই মেরুর দুই দিকে অবস্থান করবে। তাদের মিথস্ত্রিয়া ঐক্যনাশ করবে বা একে অপরকে নিষ্ক্রিয় করবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা এ ঘটনাই পরবর্তী বরফযুগ ডেকে আনবে।

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ