সোনামসজিদ স্থলবন্দরে স্থবিরতা: ১১ হাজার মানুষের মানবেতর জীবনযাপন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
নানা জটিলতার কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে করে বেকার হতে বসেছে ১০ হাজার শ্রমিক। ২০৫ জন সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের লাখ লাখ টাকা লোকসানের খপ্পরে পড়েছেন। আবার তাদের অধিনে থাকা  প্রায় ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী ঠিকমত বেতন ভাতাও না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

 

সোনামসজিদ স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। নানা অজুহাতে গাড়ি ছাড় দিতে দেরি করায় আমরা সঠিক সময়ে পণ্যবাহী ট্রাক নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি না। এতে করে হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।’

 

তিনি আরো বলেন, অনেক সময় পচনশীল পণ্য পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতি গাড়িতে আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। ফলে আমাদের অধীনে থাকা এসোসিয়েশনের প্রায় ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঠিকমত বেতনভাতা দিতে না পারায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’

 

তিনি আরও জানান, স্থলবন্দরের রাজস্ব আদায়ে অর্থ বছরে প্রথম ৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা।

 

তিনি ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ারের সাধারণ সম্পাদক ভূপতি মন্ডলের বরাত দিয়ে বলেন-স্থলবন্দরে বিভিন্ন অজুহাতে গাড়ি ছাড়ে নানা ধরণের হয়রানি ও বিলম্ব হওয়ায় ভারতের মহদিপুরে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে।

 

এসোসিয়েশনের বন্দর ও কাস্টমস সম্পাদক আবদুর রাকিব সিল্কসিটি নিউজকে জানান, নিয়ম অনুসারে ফলের গাড়িতে ১০% ছাড় দেয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে সে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তারপরও নানা ধরণের হয়রানীর কারণে ফল আমদানী দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। কিছুদিন আগে প্রতিদিন ৪০-৫০ ট্রাক আমদানী হতো ফলের গাড়ি। বর্তমানে মাত্র ৮-১০ গাড়ি ফল আমদানী হচ্ছে।

 

তিনিেআরো জানান, গত বছর এসময় বন্দরে প্রতিনিধি ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যভর্তি গাড়ি প্রবেশ করত। বর্তমানে অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে।

 

শ্রমিক সমন্বয় কমিটির সভাপতি সাদেকুর রহমান মাস্টার জানান, বন্দরে ৩১টি সংগঠন মিলে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। যা আগে প্রতিদিন দেড়শ টাকা করে আয় করতে পারতো। বর্তমানে তাদের আয় কমে মাত্র ৩০ টাকায় এসেছে। ফলে অনেক শ্রমিকের পরিবারকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাদিপাত করতে হচ্ছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের কয়েকজন জানান, একটি চক্র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বন্দরকে সম্পূর্ন বন্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

 

এব্যাপারে রাজশাহী বিভাগের কাস্টমস কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে যোগাযোগের করার চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

স/আর