সোনামসজিদ বন্দরে ১৪ দিন ধরে পাথর আমদানি বন্ধ: বেকার হাজারো শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
সোনামসজিদ বন্দরে গত ১৪ দিন থেকে ভারত থেকে কোন পাথর আমদানী করছে না পাথর আমদানী কারকেরা। ফলে স্থলবন্দরে প্রায় ৪-৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে রাজস্ব আয়ও কমে যাচ্ছে।
জানা গেছে, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গত ১৫ নভেম্বরে সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৭ই নভেম্বর থেকে আমদানীকৃত পাথরে টন প্রতি ৫০-৫২ টাকা টোল ও ফি দিতে হবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে। এই ট্যারিফ সিডিউল অনুযায়ী টোল ও ফি না দেওয়ার প্রতিবাদেই আমদানী কারকেরা ভারত থেকে পাথর আমদানী বন্ধ রেখেছেন।

অন্যদিকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানী ও রপ্তানীকারক গ্রুপের কবিরুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক তফিকুর রহমান বাবু জানান, ভারতীয় রপ্তানী পাথর কারকদের অতিরিক্ত মুনাফা, ভারতের মহদিপুর বন্দরে ১৫ কিলোমিটার দূরে শুনানী নাম স্থানে উদ্দেশ্যভাবে পাথর ইয়াদ তৈরি করে অহেতুক লোকাল ফিটনেস বিহীন ট্রাকে পণ্য পুনঃ লোড করে বেশি ভাড়া প্রদানে বাধ্য করা, ইচ্ছাকৃতভাবে জট তৈরি করে বিলম্ব করিয়ে ট্রাক থেকে বিলম্ব ফি আদায়ে এমনিতেই লোকসানে পড়েছেন পাথর আমদানিকারকেরা।

তার ওপর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বন্দর কর্তৃপক্ষ আগের মতো করে সুযোগ না দিলে এবং সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ সিডিউল অনুযায়ী টোল ও ফি বাবদ টন প্রতি পাথরের জন্য বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে টাকা দিতে হলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে কারো পক্ষেই পাথর আমদানি করা সম্ভব হবে না। তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে পাথরভর্তি ট্রাকের জন্য গুনতে হবে টন প্রতি ১৫২ টাকা হারে। এক ট্রাক পাথরের জন্য ৫-৬ হাজার টাকা, আগে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সবার সিদ্ধান্তেই ছিল ৭৮৩ টাকা।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন জানান, আমদানি করা পাথর থেকে সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ সিডিউল অনুযায়ী টোল ও ফি আদায় না হওয়ায় গত ১৩ বছরে কয়েকশ’ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত সরকার।

তিনি আরও জানান, ভারতে মহদীপুর স্থলবন্দর থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বিভিন্ন পণ্য সমূহ যে সকল যানবাহন পণ্য পরিবহন করা হয় তার শতকরা ৯০ ভাগ যানবাহনই ফিটনেস বিহীন। এ সব পরিবহন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। প্রতিদিনই এ সমস্ত লক্কর ঝক্কর পরিবহন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের গতিতে যানজট সৃষ্টি করছে। প্রায় দিনই দুই একটি গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় যানজটে সৃষ্টি করছে। এ সকল ফিটনেস বিহীন ট্রাকগুলো পাথর রপ্তানি কারকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে সোনামসজিদ বন্দরে পাঠিয়ে বিড়ম্বনার সৃষ্টি করছে।

তারা জানায়, মাত্র ১৫-১৬ কিলোমিটার দূর থেকে বর্ডারে আস্তে ৪০ হাজার রুপির ভাড়া নেয়। যা পাথর আমদানীকৃত পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে। সোনামসজিদের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানাগেছে, বাংলাদেশ হতে আমদানিকারকগণ যে সকল ব্যাংকের মাধ্যমে আমদানি ঋণ পত্র খুলে থাকে সে সকল আমদানি ঋণপত্রের (L.C) শর্তাবলীতে আমদানি পণ্যবাহী যানবাহনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ফিটনেস সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়। তাহলে এই ফিটনেস বিহিন গাড়িগুলো সোনামসজিদের প্রবেশ করতে পারবেনা।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের যানবাহনে ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক কড়া নজরদারি ব্যবস্থা করলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে বাণিজ্যিক মহল মনে করছেন।