সিরাজগঞ্জে ৩০ ঘণ্টায় দু’বার লাইনচ্যুত ট্রেনের ইঞ্জিন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনে পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের সদ্য নির্মিত লুপ লাইনে একই স্থানে মাত্র ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে লুপ লাইনের নির্মাণ ও কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

 

সোমবার রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের ট্রেন যাত্রী নামিয়ে রেখে ইঞ্জিন সান্টিংয়ের সময় উত্তর দিকের পয়েন্টিংয়ের কাছে এটির দু’টি চাকা লাইনচ্যুত হয়। স্থানীয় রেল কর্মচারী ও শ্রমিকরা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টানা দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর ইঞ্জিনটি ফের লাইনে তুলতে সক্ষম হন। ওই লুপ লাইনে একই স্থানে রবিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ-চাঁপাই নবাবগঞ্জগামী রাজশাহী এক্সপ্রেস লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিন সান্টিংয়ের সময় লাইনচ্যুত হয়।

 

মাত্র ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি ট্রেনের ইঞ্জিন একই স্থানে লাইনচ্যুত হওয়ায় লুপ লাইনের যথার্থতা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন রেল সংশ্লিষ্টরা। এ লুপ লাইনে আবারও ট্রেন বা ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের কর্মকর্তাদের অনেকেই।

 

নকশা ও পরিকল্পনা ছাড়াই পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সওয়েল কোম্পানিকে দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে আধা কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ লুপ লাইন নির্মাণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। স্টেশনটির প্লাটফর্ম বাঁকা থাকায় লুপ লাইনও বাঁকা করে তৈরি করা হয়।

 

তবে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক) আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘লুপ লাইন বেশি মাত্রায় বাঁকা, অন্যদিকে লাইনের সাথে ক্লিপ-লকগুলো ভালো হয়নি। অনেকটা স্প্রিং-এর মতো। ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিন সান্টিং-এর সময় পয়েন্টেং-এর নিকট চাকা পৌঁছলে নাট-বোল্ট খুলে চাকা লাইনচ্যুত হয়।’

.

স্থানীয় রেল বিভাগের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পিডাব্লিউআই) আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘স্টেশন বাঁকা থাকার কারণে লাইনও বাঁকা করে তৈরী করা হয়েছে। আর এ বাঁকা লাইনেই এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতনরাও অবগত আছেন।’

 

তিনি আরও জানান, ‘রাজশাহী এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন উদ্ধার করতে ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন আনা হয়েছে। এ লুপ লাইনের বিষয়ে আরও চিন্তা-ভাবনা করা দরকার। নতুবা আবারও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লুপ লাইনের স্লিপারের নিচে খোয়া ও পাথর ফেলা দরকার। হয়তো আগামীতে এটি ফেলা হবে।’

 

পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ পাকশীর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) অসীম কুমার চৌধুরী সোমবার রাতে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘লুপ লাইনটি বাঁকা হওয়ায় এটিতে এ ধরনের সমস্যা হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এটি স্থায়ী হতে কিছুটা সময়ের দরকার। তবে, বড় ধরনের বিপর্যয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন