সিজারিয়ান অপারেশনের ৬ ঘণ্টা পর অন্ধ হয়ে গেলেন গৃহবধূ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় শারমিন আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান গৃহবধূর বাবা লেহাজ উদ্দিন।

শারমিন আক্তার কাপাসিয়া উপজেলার কপালেশ্বর গ্রামের মোশারফ হোসেনের স্ত্রী। তার স্বামী নারায়ণগঞ্জের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বাবার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালীয়া গ্রামে।

লেহাজ উদ্দিন বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে শারমিনকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাত ৮টায় তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। সিজারিয়ান অপারেশনে এক পুত্রসন্তান জন্ম দেয় শারমিন। অপারেশনের পর রাত ৩টার দিকে দুই চোখে কিছু দেখতে পায় না বলে জানায় সে। বিষয়টি চিকিৎসককে জানানো হয়। ওই দিন সকালে তড়িঘড়ি করে রোগীকে রিলিজ করে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে গত বছর একই হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় এক শিশু ও এক মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ উল্লাহ বলেন, ওই দিন প্রসূতি শারমিন আক্তারের অপারেশন করেন গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আলেয়া খাতুন। তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতালের পাশের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন। ওই হাসপাতালে রোগীর অপারেশনের কথা ছিল। কিন্তু ওই খানে অপারেশন থিয়েটারের সংস্কারকাজ চলায় আমাদের এখানে অপারেশন করেন। কাজেই এই দায় আমাদের না। যিনি অপারেশন করেছেন এবং এনেস্তেশিয়া করেছেন তারা বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। তবে অপারেশনের আগে প্রসূতি শারমিন আক্তারের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক ছিল। অপারেশনের ৬-৭ ঘণ্টা পর প্রথম অবস্থায় ঝাপসা দেখলেও পরবর্তীতে চোখে দেখতে পাননি তিনি।

চিকিৎসক আলেয়া খাতুন বলেন, এ ধরনের ঘটনা সাধরণত ঘটে না। তবে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্তক্ষরণের ফলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ বলেন, বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে গেছি। চিকিৎসকের সঙ্গে কথাও বলেছি। পাশাপাশি রোগীর স্বজনদের বলেছি আগে রোগীর চিকিৎসা করান। কারও দোষ থাকলে তা পরে দেখা যাবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু জেনেছি, এই ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ