সালিসে অশীতিপর বৃদ্ধের সঙ্গে তরুণীর বিয়ে! মহির উদ্দীন বললেন ‘জুলুম’

মাদরাসাছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক শাহীনের। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সালিস বসে। সেখানে ৮৫ বছর বয়সী মহির উদ্দীনকে দোষী করে তার সঙ্গে ওই মাদরাসাছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হয়। জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়ড়া পারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, বয়রাপাড়া গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে শাহীন (১৮)-এর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল স্থানীয় এক মাদরাসারছাত্রীর। তার সাথে অবৈধ মেলামেশায় গর্ভবতী হয় ওই ছাত্রী। এরপর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাতব্বররা চলতি সপ্তাহে মিমাংসার জন্য গ্রাম্য সালিস বৈঠক করে। সালিসে মহির উদ্দিনকে (৮৫) দোষী সাব্যস্থ করে সালিসকারীরা। পরে তাকে এবং শাহীনকে ১০টি করে দোররা দেওয়া হয় সালিসে। সালিসকারীরা ওই মাদরাসাছাত্রীর সঙ্গে ৮৫ বছর বয়সী অশীতিপর বৃদ্ধ মাহির উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেন।

এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছে বৃদ্ধ মহির উদ্দিন তার দোষ স্বীকার করেছেন। শাহিনের পরিবারেরে পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, শাহীন কিছু করেনি।

ভুক্তভোগী মহির উদ্দীন বলেন, ‘স্থানীয় এক মেম্বার জয়নাল আবেদিন নাদু, গফুর মাস্টার, কুদ্দুস মাস্টার মিলে বিচারের নামে আমার উপর জুলুম করেছে। আমি নির্দোষ। কিন্ত আমার উপর দোষ চাপায়ে দিয়েছে।

চর আমখাওয়া ইউনিয়নের মেম্বার জয়নাল আবেদিন নাদুর দাবি, গ্রামের সব মুরব্বি দেওয়ানী বসে সালিস করা হয়েছে। সেই সালিসে মহির দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাই তাকে বিয়ে করানো হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আজিজুর রহমান  জানান, আমাকে কেউ কিছুই অবগত করেনি। আমি সাংবাদিকদের কাছে সব জেনেছি। যেই অন্যায় করুক এর দায় সে নিবে। এর আইনগত বিচার হওয়া উচিৎ।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এম এম ময়নুল ইসলাম বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমি নিজে সেখানে গিয়েছি। সেই মেয়ের কাগজপত্র দেখে জেনেছি, তার বয়স ১৮ বছর ৯ মাস। সেই বৃদ্ধ আর তার স্ত্রীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মেয়ের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। যে কারণে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ