সারাদেশে অতিভারী বৃষ্টির আভাস, সতর্কতা সংকেত

মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে আকাশে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপের প্রভাবে ইতোমধ্যে বৃষ্টি কিছুটা বেড়েছে।

গতকাল (মঙ্গলবার) ভোর থেকে ঢাকায় থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হয়। লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হলে এই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরো বাড়তে পারে এবং সারা দেশেই ভারী বৃষ্টি হতে পারে। নদী বন্দরের দিকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে নদী বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অদূরে অন্ধপ্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অদূরে উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।

পরবর্তী দুদিনে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। পরের ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সন্দ্বীপে সর্বোচ্চ ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।  এ ছাড়া কক্সবাজারে ১০৫, হাতিয়ায় ১০৪, সীতাকুণ্ডে ৭৫, খেপুপাড়ায় ৫৪, কুতুবদিয়ায় ৪৯, সিলেটে ৩৩, ভোলা ও ফেনীতে ২৯, টেকনাফে ২৭, মাইজদীকোর্টে ২৪ এবং চট্টগ্রামে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। মঙ্গলবার দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন সন্দ্বীপে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বাড়তি অংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে— রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখলী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর (পুন) সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ