দেশের ইতিহাসে প্রথম

সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে রায় আজ

ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাসহ ১১ জনের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন আদালত। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে রায় হতে যাচ্ছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায় ঘোষণা করবেন।

আসামি মাহবুবুল হক চিশতী ও লুত্ফুল হকের আইনজীবী শাহিনুর রহমান বলেন, ‘এ মামলায় আমার দুই মক্কেলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। দুদক তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁরা দুজন নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি।’

মামলাটি করা দুদক আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রত্যাশা করছে। দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা চার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি করে অর্থ পাচার করেছেন। এ অভিযোগের বিষয়ে আমরা সব আলামত আদালতে উপস্থাপন করেছি। সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, আদালত তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেবেন।’

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুত্ফুল হক, সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তাঁর স্ত্রী সান্ত্রী রায়। আসামিদের মধ্যে সিনহাসহ চারজন পলাতক।

গত বছরের ১০ জুলাই দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এ পাঠানোর আদেশ দেন। গত ১৩ আগস্ট আদালত ১১ জনের অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন।

এরপর গত ১৮ আগস্ট আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী সৈয়দ ইকবাল হোসেন সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদের জেরার মধ্য দিয়ে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলায় ২১ জন সাক্ষীর সবার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি এস কে সিনহাসহ ১১ আসামির সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেন। দুদকের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে সাত আসামির পক্ষে তাঁদের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন ও শাহীনুর ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্কে আসামিদের নির্দোষ দাবি করে তাঁদের খালাস দাবি করেন তাঁরা। যুক্তিতর্ক শোনা শেষে আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ