সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করার তাগিদ

জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকায় পশ্চিমা কয়েকটি দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতরা। একই সঙ্গে তাঁরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করার ওপর জোর দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে আলাদাভাবে তাঁরা গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘সর্বত্র জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া অপরিহার্য। নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারির মধ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করা অপরিহার্য।’

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনও প্রায় অভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর টুইট বার্তায়। তিনি লিখেছেন, যেকোনো স্থানে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া অপরিহার্য। কভিড-১৯ সংকটের মধ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমকে তার দায়িত্ব পালন করতে পারা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডেলিগেশন প্রধান ও রাষ্ট্রদূত রেঞ্চে টিয়েরিংক বলেছেন, ‘যেকোনো সময়ের তুলনায় সংকটের সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবভিত্তিক তথ্য পাওয়ার সুযোগ জনগণের পাওয়া উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ভুয়া খবর যখন গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠতে পারে তখন সাংবাদিকদের মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।’

নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন বলেন, ‘অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন আমাদের সত্য জানা বেশি প্রয়োজন। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন আমাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেশি প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘কভিড-১৯ সংকটের মধ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমকে তার দায়িত্ব পালন করতে পারা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারভেজ বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতাকে সমর্থন করে। যেকোনো স্থানে, বিশেষ করে সংকটের সময় স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রকৃত ঘটনা ও তথ্য পাওয়ার সুযোগ অপরিহার্য। প্রকৃত তথ্য জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা কমর।’

সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শারলোটা স্লাইটার বলেন, ‘অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আমাদের তথ্য ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেশি জরুরি। কভিড-১৮ সংকটের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা দেওয়া এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করা আবশ্যিক।’

ডেনিশ রাষ্ট্রদূত উইনি অ্যাস্ট্রাপ পিটারসন বলেন, ‘সংকটের সময় আমাদের তথ্য-উপাত্ত, যেকোনো সময়ের চেয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেশি প্রয়োজন। কভিড-১৮ সংকটের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা দেওয়া এবং সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করা অপরিহার্য।’

জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, যেকোনো স্থানে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-উপাত্ত থাকার সুযোগ অপরিহার্য। কভিড-১৯ সংকটের মধ্যে সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ না করা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

হঠাৎ জাপান থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতদের এমন প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রেক্ষাপট বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাঁরা সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়েই নিজ নিজ উদ্যোগে ওই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ওই দেশগুলোর বেশির ভাগই বৈশ্বিক অঙ্গনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর এ সংকটের তথ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে ওই দেশগুলো বৈশ্বিকভাবে আগেও বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া গত ৩ মে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক দিবসকে ঘিরেও ঢাকায় কয়েকটি পশ্চিমা দূতাবাস তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ