সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

আধুনিক রাষ্ট্রে গণতন্ত্র সামাজিক অগ্রগতির একমাত্র চাবিকাঠি। তাই আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য গণতন্ত্রকেই বেছে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান পৃথিবীতে পুঁজিবাদের জয়জয়কার। এক মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তো বলেই ফেলেছেন, Capitalism is the end

of the history, অর্থাৎ পুঁজিবাদই ইতিহাসের শেষ। কিন্তু চার্লস ডারউইনের বিবর্তন যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে পুঁজিবাদী শোষণের শেষ একদিন হবে। ফিরে আসবে মানুষের মধ্যে বৈষম্যহীনতা। পুঁজিবাদে রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকে; কিন্তু সেটা থাকে বুর্জোয়াদের জন্য।

অর্থনৈতিক নিরাপত্তা থাকে না শোষিত-বঞ্চিতদের জন্য। পুঁজিবাদে শোষিত আরও শোষিত হতে থাকে। তাই পুঁজিবাদকে আমরা ইতিহাসের শেষ বলতে পারি না। আবার অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করা হয়; কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকে না। এসব দিক ভেবে নিয়ে আমি কতগুলো পদক্ষেপের প্রস্তাব করছি, যা একক কোনো মতবাদের ওপর ভিত্তি করে নয়। এর সম্পূর্ণ অংশই নেয়া হয়েছে বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি ও সমস্যা থেকে, যা আধুনিক কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিহিত। বাংলাদেশের মূল সমস্যা চিহ্নিত করে এর সমাধান দেয়া হয়েছে এতে।

নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি তুলে ধরে জনগণের সামনে। কিন্তু সঠিক কর্মসূচি না দিলে দারিদ্র্যসহ অনেক সমস্যাই দূর হবে না। কিছুদিন আগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত চার বছরে মাত্র ৭ শতাংশ দারিদ্র্য দূর হয়েছে। এমনিভাবে চলতে থাকলে ৬৫ বছর লাগবে সম্পূর্ণ দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে। এভাবে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলতে থাকলে আমরা উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মেলাতে পারব না। তাই নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে নিচে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো রাজনৈতিক দলগুলো গ্রহণ করতে পারে। মনে রাখা দরকার, সাহসী পদক্ষেপ না নিলে দেশ এগিয়ে যাবে না। পদক্ষেপগুলো আমার ব্যক্তিগত মতামত হলেও বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিত।

১. বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত। জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে সে তুলনায় সম্পদ বাড়ছে না। সরকারিভাবে আইন করতে হবে, একটি সন্তানের বেশি নেয়া যাবে না। স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৭ কোটির মতো; যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি। গত ৪০ বছরে জনসংখ্যা হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। এভাবে চলতে থাকলে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে কী হবে তা সহজেই অনুমেয়।

অধিক সন্তান নিয়ে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যেমন- দেশের যে কোনো ধরনের নির্বাচনে বিশেষ করে গ্রামের বা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থীদের একের বেশি সন্তান হলে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে। একের অধিক সন্তানের কারণে সরকারি চাকরি পাবে না; বা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। একটি সন্তানের পরে সরকারি দায়-দায়িত্বে সন্তান জন্মদান বন্ধ করাতে হবে।

২. আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। এর মধ্যে বর্গাপ্রথার উচ্ছেদ সর্বাগ্রে অগ্রগণ্য। কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে। বর্গাপ্রথার বিলুপ্তি ঘটাতে হবে। ৩. প্রকৃত ভূমিহীনদের সরকারি খাসজমি বিনাশর্তে দিতে হবে। ৪. কৃষির উন্নতি মানেই জাতির উন্নতি। তাই সরকারি উদ্যোগে সমবায় খামার গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারি উদ্যোগেও সমবায় খামারের জন্য উৎসাহ দিতে হবে।

৫. শিক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। স্নাতকোত্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা নিতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে ব্যয় ভার কমিয়ে শিক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। ৬. প্রতিটি গ্রামে একটি করে (ন্যূনতম) প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে স্থাপিত সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে সরকারি করতে হবে। ৭. মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হওয়ার পরে যদি দেখা যায়, ছাত্রের ওপরের দিকে শিক্ষা গ্রহণ না করাই ভালো, তাহলে তাকে কারিগরি শিক্ষার দিকে ঠেলে দিতে হবে। তাই প্রতিটি জেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে হবে। ৮. মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাঠ্যবইয়ে যৌন শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অপরাধপ্রবণতা যাতে গড়ে না ওঠে, সচেতনভাবে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং যাতে করে ইভটিজিং চিরতরে বন্ধ হয় সে পদক্ষেপ নিতে হবে। ৯. শিক্ষাক্ষেত্রে সামরিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ন্যূনতম ১ বছর সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

তবে প্রশিক্ষণকালীন ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের স্বার্থে যে কোনো যুদ্ধে যাতে জনগণ সরাসরি যুক্ত হতে পারে সেজন্য আগে থেকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে রাখা দরকার। ১০. সেশনজট দূর করে নিয়মিতভাবে কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়া শেষ করে গ্রামে এক বছর কাজ করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিশেষ করে যারা ওপরের স্তর পর্যন্ত পড়বে তাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

যেহেতু শিক্ষাটাকে ফ্রি করা হয়েছে, সেহেতু দেশের প্রতি প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে। গ্রামে কাজ করার সময় প্রত্যেককে ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামের সার্বিক কল্যাণই-এর প্রধান লক্ষ্য। বিশেষ করে নিরক্ষরকে অক্ষর জ্ঞান দানসহ গ্রামের উন্নতির জন্য যে কোনো পদক্ষেপ নেয়া যাতে পারে।

১১. প্রত্যেক শিক্ষিত লোকের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তারপরও যদি শিক্ষিত বেকার থাকে, তাহলে তাদের ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্নাতকোত্তর পাস করা ছাত্রদের অবশ্যই চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। যদি তারা চাকরি না পায়, তাহলে সার্টিফিকেট জমা দিয়ে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ১২. প্রত্যেক জেলায় ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

১৩. খেলাধুলার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দের সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। ১৪. শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক সরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। বন্ধ কলকারখানা চালু করতে হবে এবং সম্ভাবনাময় শিল্পখাত সৃষ্টি করতে হবে। শিল্পক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগকেও স্বাগত জানাতে হবে। ১৫. সরকারি মালিকানাধীন কিছু প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। ১৬. ঋণ নেয়া বেসরকারি কারখানা কোনো মতেই বন্ধ করা চলবে না। যদি কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সরকারের কাছে তা হস্তান্তর করতে হবে। ১৭. ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল করতে দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।

১৮. ৭১-এর ঘাতক-দালালদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে এবং গণআদালতের রায় কার্যকর করতে হবে। ১৯. গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ২১. বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করতে হবে। ২২. কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক দলাদলি করতে দেয়া যাবে না। ২৩. সংসদ নির্বাচন দলভিত্তিক ভোটাভুটির মাধ্যমে হতে হবে। কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হবে না। যে দল বেশি ভোট পাবে সে দল জয়ী হবে। পরে দল তার সদস্যদের মনোনীত করবে। প্রয়োজনীয় স্থানে সংবিধানের সংশোধনী করে নিতে হবে।

এতে করে কোনো ব্যক্তির অর্থ খরচ হবে না। এর ফলে দুর্নীতি কমে আসবে। সারা দেশের মানুষ দলের প্রতীকে ভোট দেবে। নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি না থাকলে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচনের ফলে যোগ্য ব্যক্তির সংখ্যা বাড়বে। পৃথিবীর অনেক দেশে এ রকম ব্যবস্থা চালু আছে। ২৪. বেতার ও বিটিভিকে প্রকৃত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।

২৫. যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য প্রয়োজনীয় সব স্থানে বিশেষ করে নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করতে হবে। ২৬. ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য প্রধান সড়কগুলো দ্বিতল রাস্তা করতে হবে। দোতলা বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে চাহিদা অনুযায়ী। ২৭. নির্মীয়মাণ মেট্রোরেলের পাশাপাশি মাটির নিচ দিয়ে চলার উপযোগী মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই করে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি এবং উন্নত দেশের কাছ থেকে শর্তহীন ঋণ নেয়া যেতে পারে।

২৮. অযথা রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। যেসব সংস্থা এ রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করবে তাদের মধ্যে সমন্বয় করে বছরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে পরে রাস্তা কাটা হবে। ২৯. পুরনো জেলা এবং বেশি জনসংখ্যার জেলাকে বিভাগে উন্নীত করতে হবে। যেমন- বগুড়া, কুমিল্লা ইত্যাদি। ৩০. রাজধানীর ওপর থেকে মানুষের চাপ কমানোর জন্য রাজধানীর আশপাশে উপশহর গড়ে তুলতে হবে। সেসব উপশহরে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাট নির্মাণ করতে হবে। নিুবিত্ত মানুষের জন্য কম টাকায় ওইসব ফ্ল্যাট বিলি করতে হবে। বিশেষ করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন বস্তিগুলোকে সরানোর পর তাদের আয়-সঙ্গতি অনুযায়ী ফ্ল্যাট বিলি করতে হবে।

৩১. সন্ত্রাস দমনের জন্য শুধু আইন করলেই হবে না, তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। সন্ত্রাসী যাতে জামিন না পায় তার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। সন্ত্রাসী ধরা মাত্রই তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৩২. দেশে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কেন্দ্র করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তি চিরতরে বন্ধ করার জন্য ভিক্ষুকদের ওইসব কেন্দ্রে নিয়ে কুটির শিল্পসহ নানাবিধ কাজে লাগাতে হবে। প্রতিটি জেলায় এ কেন্দ্র চালু করতে হবে। ৩৩. বাজারব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পণ্যমূল্য বাড়তে দেয়া যাবে না। বাজারমূল্য অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি বেতন নির্ধারিত হবে। জনগণের গড় আয় অনুযায়ী বাজারমূল্য নির্ধারিত হবে।

৩৪. ঘুষ, দুর্নীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তার জন্য উপযুক্ত শাস্তির বিধান করতে হবে। ৩৫. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে; বৈরী মনোভাব নয়। তবে ইসরাইল ব্যতিরেকে। ৩৬. মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের খবরদারি ও এর চাপের কাছে নতিস্বীকার করা যাবে না। ৩৭. সব দেশের সহযোগিতা নেয়া হবে। ঋণ বা সাহায্য যাই পাওয়া যাক না কেন, তা জনগণের কল্যাণে ব্যয় হতে হবে।

৩৮. প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খাত চিহ্নিত করে সেখান থেকে অর্থ বরাদ্দ প্রত্যাহার করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণূ খাতে সেই অর্থ ব্যয় করতে হবে। ৩৯. সর্বক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে নারীর সমান অধিকার থাকবে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষক ও ফতোয়াবাজের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। ৪০. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। বুলেট নয়, ব্যালটই ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পদ্ধতি। এ নীতি সর্বদা প্রযোজ্য হবে। ৪১. জনগণের মধ্যে ক্ষমতার শেয়ার ছড়িয়ে দিতে হবে। তৃণমূল পর্যন্ত ক্ষমতার শেয়ার দিতে হবে। তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব বের করে নিয়ে আসতে হবে। ৪২. দরিদ্রদের জন্য বিনা খরচে আইনি সহায়তা দিতে হবে।

৪৩. সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই এসএসসি হতে হবে। দেশের প্রধান যিনি হবেন- রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককেই ন্যূনতম এসএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। ৪৪. ঐতিহাসিক এলাকাগুলোকে পর্যটনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র সৈকত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং সুন্দরবনকে ঢেলে সাজাতে হবে। কোনো বনখেকোকে দায়িত্ব দেয়া চলবে না। কক্সবাজার ও সুন্দরবনকে উপভোগ করার জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ৪৫. সংবিধানের মূলনীতি হবে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বিশ্ব মানবতার অর্থে আন্তর্জাতিকতাবাদ ও সমাজতন্ত্র- এ চারটি হবে বাংলাদেশের মূলনীতি। এজন্য প্রয়োজনে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে। ৪৬. ফারাক্কা চুক্তি স্থায়ীভাবে করতে হবে, যাতে করে এর প্রয়োজনীয়তা বারবার দেখা না দেয়। তবে সেক্ষেত্রে সমতার নীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৪৭. সার্ককে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেজন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোকে নিয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে এ উপমহাদেশে সার্ক নিরাপত্তা সংস্থা গঠন করতে হবে। ৪৮. হরতাল-অবরোধ নিষিদ্ধ করতে হবে আগামী ২০ বছরের জন্য। তবে ধর্মঘট, সমাবেশ ইত্যাদি থাকতে পারে।

৪৯. পতিতাদের উচ্ছেদ করা হবে না। তাদের পুনর্বাসন করা হবে। ৫০. শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। যেসব শিশু বাধ্য হয়ে শ্রম করে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। বিশেষ করে পথশিশু বা টোকাইদের লেখাপড়া নিশ্চিত করতে হবে। যেসব শিশুর থাকার জায়গা নেই, তাদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। বিনা খরচে থাকা ও পড়ালেখার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৫১. গার্মেন্ট শ্রমিকদের থাকার জন্য আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে। সেজন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে। ৫২. বাংলা ভাষায় ধর্মচর্চা করার প্রচলন করতে হবে। যেমন- আজান দেয়া বাংলা ভাষায়, নামাজ পড়া বাংলা ভাষায়, মিলাদ মাহফিলসহ সবকিছুই বাংলা ভাষায় করতে হবে। ফলে ধর্মীয় শিক্ষা পাবে জনগণ। ধর্মীয় কুসংস্কার, গোঁড়ামি থাকবে না। এখানে ভুল বোঝার অবকাশ নেই। পৃথিবীর অনেক দেশে নিজেদের ভাষায় ধর্মচর্চা করা হয়। ফলে ধর্মচর্চা করার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়ে যাবে। ৫৩. আইটি সেক্টরে ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে কম্পিউটার শিল্পকে সাধারণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রতি জেলায় আইটি পার্ক স্থাপন করতে হবে, যেখান থেকে মেধাবী আইটি প্রফেশনাল তৈরি হবে। সফটওয়ার রফতানিতে ব্যাপক সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। ৫৪. পল্লী রেশনিং চালু করতে হবে। ৫৫. শস্যবীমা চালু করতে হবে।

সাইফউদ্দিন মো. শোভন : সাংবাদিক