‘সময়ক্ষেপনের অবকাশ নেই, এক্ষুণি মাঠে নামতে হবে’

‘সময়ক্ষেপনের অবকাশ নেই। এক্ষুণি শুরু করতে হবে মূলধারায় জোরালো সম্পর্ক রচনার ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আর এটি সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব প্রতিটি নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামা। তাহলেই আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম হবে’-এমন অভিমত পোষণ করেছেন জর্জিয়া স্টেটের সিনেটর শেখ রহমান।

শনিবার দুপুরে ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়ায় ‘আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র কনফারেন্স রুম’-এ এক সুধী সমাবেশে বাংলাদেশী আমেরিকান সিনেটর শেখ রহমান ছাড়াও বক্তব্য দিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স কাউন্টি সিভিল কোর্টের জজ প্রার্থী (ডেমক্র্যাট) এটর্নি সোমা সাঈদ।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় টার্মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্টেট সিনেটর (সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৫ )নির্বাচিত হবার পর সামনের বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন সিনেটর শেখ রহমান (ডেমক্র্যাট)। তিনি লড়ছেন জর্জিয়া স্টেটের আটলান্টা সংলগ্ন গুনেট কাউন্টি এলাকা থেকে। এই দুই প্রার্থীর নির্বাচনী তহবিল গঠনসহ সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে এ আলোচনার হোস্ট ছিলেন ‘আই-গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ এবং স্থানীয় কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট রেদওয়ান চৌধুরী। বিশেষ সম্মানীত অতিথি ছিলেন ‘সাউথ এশিয়ান ফর বাইডেন’ টিমের সিনিয়র এডভাইজার এবং বিল ক্লিন্টন আমলের রাষ্ট্রদূত ওসমান সিদ্দিক।

জর্জিয়া স্টেটে প্রথম মুসলমান সিনেটর শেখ রহমান (৬১) বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভাজন দূরে ঠেলে এখানকার সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের সাথে একাকার হতে হবে। সকলেই যেন অনুধাবনে সক্ষম হন যে আপনি তাদের বিশ্বস্ত একজন। তাহলেই ব্যালট যুদ্ধে জয় অর্জন করা সহজ হয়। আর এটাই হচ্ছে মূলমন্ত্র নির্বাচনের বৈতরণী পাড়ি দেয়ার। এভাবেই আমি আমার নির্বাচনী এলাকার ৯৮% ভিন্ন ভাষা আর বর্ণের মানুষের সাথে মজবুত একটি সম্পর্ক গড়েছি দীর্ঘদিনের কাজকর্মের মধ্যদিয়ে।’

কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ রহমান বলেন, সামনের বছর নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। ডেমক্র্যাটদের আরো বিজয় দিতে হবে ইউএস কংগ্রেসে। তাহলেই অভিবাসী সমাজের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর যে ধাক্কা লাগছে বৈরী প্রকৃতির পক্ষ থেকে, এমন একটি অসহনীয় পরিবেশ থেকে আমাদের সন্তান তথা ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষাকল্পে সকলকে আন্তরিক অর্থে সজাগ থাকতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিরাপদ বসতির স্বার্থে বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে সর্বস্তরে।

ওসমান সিদ্দিক বলেন, নানাকারণে অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে গোটাবিশ্ব। আফগানিস্তান পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক হারিকেন আইডার তাণ্ডবে ক্ষত-বিক্ষত অসহায় মানুষেরা। করোনার ধাক্কার মধ্যেই জলবাযু পরিবর্তনের এই ভয়ংকর অবস্থা থেকে মানবতাকে রক্ষায় দক্ষ নেতৃত্বের জন্যে জো বাইডেনের বিকল্প নেই। এজন্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে ডেমক্র্যাটিক পার্টির পতাকাতলে। হোয়াইট হাউজ এবং কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক যত জোরালো হবে তত সুবিধা বাড়বে দেশমাতৃকার কল্যাণ এবং কমিউনিটির স্বপ্ন পূরণে অবদান রাখার। মার্কিন নির্বাচনী ময়দানে বাংলাদেশীরা আরো বলিষ্ঠ ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন বলে আশা করছি। আর এটি হতে পারে কায়িক শ্রম অথবা নির্বাচনী তহবিল গঠন কিংবা ফোন-ই-মেইল-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট প্রার্থনার মধ্যদিয়ে।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বলেছেন, মূলধারায় নির্বাচনে আগ্রহীদের জন্যে সকলকে উদারচিত্তে এগিয়ে যেতে হবে। এটিই হচ্ছে বহুজাতিক এ সমাজ ও প্রশাসনে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার একমাত্র অবলম্বন। আবুবকর হানিপ উল্লেখ করেন, গত নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশী দুই নারী সফলতা দেখিয়েছেন। পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি, নিউইয়র্কের হাডসন, নিউ হ্যামশায়ার, মিশিগানেও জয় পেয়েছেন বাংলাদেশী আমেরিকানরা। বিজয়ের এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রতিটি প্রবাসীকে আন্তরিকতার সাথে প্রার্থীগণের পক্ষে মাঠে নামতে হবে সামনের নির্বাচনেও।

 

সূত্রঃ বাঙ্গালদেশ প্রতিদিন