সবাই ভুলে গেলেও এই দিনটি ভুলবেন না স্মিথ-ওয়ার্নার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

২৮শে মার্চ। দিনটা ভুলে গেছেন? ক্রিকেট বিশ্ব ভুললেও, অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার হয়তো জীবনেও ভুলতে পারবেননা। ২০১৮ সালের এই দিনে বল টেম্পারিংয়ের দায়ে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই তারকা। কেলেঙ্কারি কাটিয়ে অবশ্য দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছেন স্মিথ-ওয়ার্নার। এই দিনে আবারো ফেরা যাক দুই বছর আগে।

স্টিভেন স্মিথের কান্না ছুঁয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আর হয়তো খেলতে পারবোনা, ওয়ার্নারের এমন ঘোষণাও হৃদয়বিদারক। দেশের জন্য লজ্জা, বলেছেন স্বয়ং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সবকিছুর পর এই ২৮ শে মার্চ আসে ঘোষণা, ক্রিকেট থেকে একবছরের নির্বাসনে স্মিথ-ওয়ার্নার।

প্রেক্ষাপট হয়তো অনেকেরই জানা। তবু আরেকবার স্মরণ করিয়ে দেয়া যাক। ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরুন বছর দুয়েক আগের মার্চে। চলে যাই কেপটাউনে। অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টেস্ট। সিরিজে ১-১ এ সমতা। চলছে তৃতীয় দিন, ব্যাকফুটে অজিরা। সিরিজ বাঁচাতে মরণকামড় দিতে হবে। অজিরা বেছে নিলো অবৈধ পন্থা। বলের শাইনিং বাড়িয়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে আশ্রয় নেয় স্যান্ডপেপারের। ক্যামেরার চোখ খুঁজে নিলো ক্যামেরন বেনক্রফটকে। তাড়াহুড়োয় অবৈধ স্যান্ডপেপার নিজের ট্রাউজারে লুকান অজি ক্রিকেটার। তবে শেষরক্ষা হলো কই!

অজিরা পড়লো রোষানলে। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রিকেটবিশ্ব ছুঁড়লো বিষেদাগার। তাৎক্ষণিক তদন্ত শেষে আইসিসি চার ডিমেরিট পয়েন্ট দিল স্মিথ-বেনক্রফটকে, তিন ডিমেরিট পেলেন ওয়ার্নার। তবে জাতীয় লজ্জা আখ্যা দেয়া অস্ট্রেলিয়া ওখানেই থামলোনা। চারদিনের তদন্ত শেষে দোষী সাব্যস্ত করে অধিনায়ক স্মিথ, সহ অধিনায়ক ওয়ার্নারকে একবছরের জন্য নিষিদ্ধ করে অজি ক্রিকেট। বেনক্রফটকে করা হয় নয় মাসের জন্য। সিরিজ শেষেই কোচের পদ থেকে অব্যাহতি নেন ড্যারেন লেম্যান।

স্মিথ-ওয়ার্নারের ক্যারিয়ারের এপিটাফ ওখানেই লিখে ফেলেছিলেন প্রায় সবাই। সবার ধারণাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দুজন ফিরলেন দ্বিগুণ আক্রোশে।

ক্রিকেটে ফিরেই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের একজন হন ওয়ার্নার। ওয়ানডেতে আগের গড়কে ছাড়িয়ে গেছেন অনেকদূর। টেস্টে করেছেন ট্রিপল সেঞ্চুরি, টি-টোয়েন্টিতেও পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরির দেখা।

স্টিভেন স্মিথও কম যাননা। টেস্টে ফিরেই হাঁকিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর তার টেস্ট গড় প্রায় ৭২। ওয়ানডে-টি টোয়েন্টিতেও যথারীতি শাসন করছেন বোলারদের।

নির্বাসন থেকে ফিরে আবারো রাজত্ব দখলের এমন গল্প রূপকথায় পাওয়া যাবে। স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নার ক্রিকেট রূপকথারই জন্ম দিয়ে চলেছেন।