রবিবার , ৬ জানুয়ারি ২০১৯ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সংরক্ষিত নারী আসনে রাজশাহীর শাহীন আক্তার রেনীসহ আসছে নতুন মুখ

নিউজ ডেস্ক
জানুয়ারি ৬, ২০১৯ ১:২০ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দশম জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ছিলেন এমন বেশির ভাগ সদস্যকেই এবার বাদ দেওয়া হবে। একাদশ জাতীয় সংসদে এসব আসনে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের বেশ কয়েকজন আত্মীয়, দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কয়েকজন নেত্রী, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের মধ্য থেকে অন্তত দুজন স্থান পেতে যাচ্ছেন। ঠাঁই পেতে পারেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিন-চারজন কাউন্সিলরও। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র এমনটাই জানিয়েছে।

ওই সব সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের স্ত্রী রাবেয়া আজিজ, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীর স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেইনি, সৈনিক লীগের প্রয়াত সভাপতি বজলুর রহমানের স্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের স্ত্রী নিলুফার আঞ্জুম পপিকে এবারের সংসদে সংরক্ষিত আসনে দেখা যাবে। তাঁতী লীগের কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তারও সম্ভাবনা বেশি। পিরোজপুর থেকে বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মীয় শেখ অ্যানিও স্থান পেতে যাচ্ছেন জাতীয় সংসদে।

আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, এবার সংসদে স্থান পেতে যাচ্ছেন শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান নুজহাত চৌধুরী ও শমী কায়সারও। নুজহাত চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত গঠনে মাঠপর্যায়ে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। অভিনেত্রী শমী কায়সারও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে দীর্ঘদিন রাজপথে সোচ্চার আছেন। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারে আইনজীবী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজও স্থান পেতে পারেন এবারের সংসদে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেত্রীও এবার সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হচ্ছেন। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া দলের কেন্দ্রীয় নেত্রীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান ও পারভীন জামান কল্পনাকে সংসদে দেখা যেতে পারে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা খাতুন কৃকও। তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ঢাকা-১৮ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়ে পাননি। নবম জাতীয় সংসদে তিনি সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছিলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলও নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এ দুই নেত্রীও সংসদ সদস্য হতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ পারভীন ডলি এবার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হতে পারেন। এক-এগারোপরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে রাজপথে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ডলি পুলিশের জুলুম-নির্যাতন সয়েছেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হন। সম্ভাবনা আছে সহসভাপতি কেশোয়ারা সুলতানা সালমার।

যুব মহিলা লীগের একাধিক সূত্র জানায়, সংগঠনটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে একটি তালিকা দেওয়া হবে। এ তালিকায় সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সহসভাপতি জাকিয়া পারভীন, পারভীন খায়ের, নারগিস মাহতাব, খায়রুন নাহার রিমি, ফৌজিয়া আক্তার পপি, ইসরাত জাহান নাসরিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ঝুমা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার রহমান, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক তাহেরা জামান লুৎফা, প্যানেল মেয়র ডেইজি সারোয়ার, কাউন্সিলর রাশেদা পারভীন ও শামীমা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুর নাহার রমা, খোদেজা নাসরিন, নাদিয়া পারভীনসহ আরো কয়েকজনের নাম থাকবে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষে একটি তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে জমা দেব। তবে আমাদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

সূত্র মতে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে দুই বা চারজন কাউন্সিলরকে সংসদ সদস্য করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাজারীবাগ এলাকা থেকে নির্বাচিত একজনকে সংসদে দেখা যাবে।

সূত্রগুলো জানায়, দশম জাতীয় সংসদে যাঁরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে দুই-চারজন ছাড়া সবাই বাদ পড়তে পারেন। শুধু বিশেষ বিবেচনায় সংসদে আবারও দেখা যেতে পারে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সানজিদা খানম ও মাহজাবীন খালেদ বেবীকে।

নবম জাতীয় সংসদে ঢাকা-৪ আসন থেকে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন সানজিদা খানম। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। তখন সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য করা হয় সানজিদাকে। এবারের নির্বাচনেও আসনটি মহাজোটকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থীকে জয়ী করতে ভূমিকা রাখেন তিনি।

সানজিদা খানম বলেন, ‘আমি কখনোই নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে গেছি এবং আমৃত্যু কাজ করে যেতে চাই। নেত্রী যদি চান তবে আবারও সংসদ সদস্য হব।’

জামালপুরে নিজের বিশেষ জনপ্রিয়তা তৈরি করেছেন মাহজাবীন খালেদ বেবী। বিগত পাঁচ বছর নিজের এলাকায় নিয়মিত সরকারের উন্নয়ন প্রচার করে গেছেন। সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের মেয়ে মাহজাবীন। একইভাবে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী হবিগঞ্জের বাহুবল ও নবীগঞ্জে নিজের বিশেষ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছেন। দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জোরালো দাবিদার ছিলেন তিনি।

ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে আবারও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করা হতে পারে। তিনি ঢাকা-১৪ আসনে দলীয় মনোনয়নের জোরালো দাবিদার ছিলেন।

সংসদ সদস্য হিসেবে দেখা যেতে পারে মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোরশেদা বেগম লিপিকে। তিনি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন আহমেদের মেয়ে।

লিপি বলেন, ‘আমি বরিশাল জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির যাঁরা অভিভাবক আছেন তাঁদের সঙ্গে এরই মধ্যে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁদের মাধ্যমে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছেও সংসদ সদস্য হওয়ার আগ্রহের কথা জানাব।’

মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী এবারের নির্বাচনে ফেনী থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। রোকেয়া প্রাচী বলেন, ‘আমি সরাসরি নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ চাইব।’

মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে সংসদ সদস্য হতে আগ্রহীদের কোনো তালিকা দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মাহমুদা বেগম কৃক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মন্ত্রিসভা গঠনের পর আমরা সংগঠনগতভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতির পরামর্শ নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

জেলাপর্যায়ের নেত্রীদের মধ্যে থেকে ১৫-২০ জনকে সংসদ সদস্য করা হতে পারে। বিভিন্ন জেলার ত্যাগী, পুরনো নেতাদের আত্মীয়দের মধ্যে থেকেও কেউ কেউ স্থান পাবেন সংরক্ষিত আসনে। সিরাজগঞ্জ থেকে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাত আরা হেনরী, পটুয়াখালী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী হেলেন, খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাসন্তী চাকমা, ঝিনাইদহ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খালেদা খানমেরও সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিখা চক্রবর্তীরও সম্ভাবনা রয়েছে।

চলচ্চিত্র জগতের অনেক তারকাই এবারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। জ্যোতিকা জ্যোতি ময়মনসিংহ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তারিনও সংসদ সদস্য হতে আগ্রহী। তাঁরা নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ছিলেন। ফলে তাঁদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে এবারের সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সদস্য করা হতে পারে। সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর