লিবিয়ার কারাগারে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

ছয় মাস আগে দালালের প্রলোভনে পা দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে আটক পারভেজ হাওলাদারের মৃত্যু হয়েছে। এক মাস আগে লিবিয়ার কারাগারে তার মৃত্যু হলেও সম্প্রতি তার পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। পারভেজ ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের পুঁটিজুরি গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস হাওলাদারের ছেলে।

নিহতের পরিবার জানায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়নের সত্যপুর গ্রামের শামসুদ্দিন পেদার ছেলে রফিক পেদা লিবিয়া হয়ে অবৈধ সাগরপথে ইতালি লোক পাঠানোর দালালি করে। গ্রামের যুবকদের ইতালি নিয়ে যাবে বলে আগ্রহীদের কাছ থেকে ৮ লাখ করে টাকা নেয় রফিক।

নিহতের বাবা ইউনুস হাওলাদার বলেন, আমার ছেলে পারভেজকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায় রফিক। লিবিয়া যাওয়ার সময় রফিককে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। লিবিয়া যাওয়ার পর আরও দুইবার আমার কাছ থেকে টাকা নেয় রফিক। ৮ লাখ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও সে সর্বমোট আমার কাছ থেকে সাড়ে ১০ লাখ টাকা নিয়েছে।

৬ মাস আগে লিবিয়া থেকে নৌপথে ইতালি যাওয়ার সময় লিবিয়ার কোস্টগার্ড আমার ছেলে পারভেজসহ অনেককে আটক করে। জেলখানায় না খেয়ে অত্যাচার নির্যাতনে এক মাস আগে আমার ছেলে মারা যায়। কিন্তু এ খবর আমরা কেউ জানতে পারিনি।

পারভেজের সঙ্গে ধরা খাওয়া আমাদের এলাকার এক ছেলে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সোমবার রাতে পারভেজের মৃত্যুর খবর জানায়। কিন্তু যে রফিক দালাল আমার ছেলেকে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এতগুলো টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, সেই রফিক দালালও ছেলের কোনো খোঁজখবর দেয়নি। রফিকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও আমার ছেলের লাশ চাই।

ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মা পান্না বেগম পাগলপ্রায়। আহাজারি করতে করতে বলেন, আর কিছু চাই না, আমার ছেলেকে চাই। অন্তত আমার ছেলের লাশ চাই। যে দালাল আমার এত বড় সর্বনাশ করেছে, তার বিচার চাই। আমার ছেলের মতো আর কোনো ছেলের যাতে সর্বনাশ করতে না পারে, আর কোনো মায়ের বুক খালি করতে না পারে- এজন্য সরকারের কাছে সঠিক বিচার চাই।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফীস বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।

 

সূত্রঃ যুগান্তর