রাবির ভর্তি পরীক্ষা: ফরমের উচ্চমূল্যে ভর্তীচ্ছুদের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সনতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ফরমের উচ্চমূল্য ও ইউনিট ভিত্তিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধতার ফলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভর্তীচ্ছুরা।

পরীক্ষা পদ্ধতির নতুন এই নিয়মকে খামখেয়ালিপনা বলে মনে করছেন তারা। তাদের কথা হলো- নতুন এই নিয়মের ফলে অনেক দরিদ্র ও মেধাবী ভর্তীচ্ছু আবেদনই করতে পারবে না। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কয়েকটি এলাকার ভর্তীচ্ছুদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৫টি ইউনিট থাকলেও এ বছর তিনটি ইউনিটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘এ’ ইউনিটের অধীনে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ‘বি’ ইউনিটের অধীনে ব্যবসায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এবং ‘সি’ ইউনিটের অধীনে বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

একজন ভর্তীচ্ছু কেবল একটি ইউনিটেই পরীক্ষা দিতে পারবে। মোট ১শ নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে ৬০ নম্বর এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। কেবল ২০১৯ সালে এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীরাই আবেদনের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়াও প্রাথমিক ও চূড়ান্ত আবেদনের জন্য একজন ভর্তীচ্ছুকে দুই হাজার ৩৫ টাকা খরচ করতে হবে।

কয়েকজন ভর্তীচ্ছু জানান, অনেক ভর্তীচ্ছুই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করে অবিজ্ঞান ইউনিটে পরীক্ষা দেবে। এতে অবিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তীচ্ছুরা পিছিয়ে পড়বে। কয়েকটি ইউনিটে পরীক্ষা দিলে যে কোনো একটি ইউনিটে চান্স পাওয়ার আশা থাকে। নতুন নিয়মে অনেক ভর্তীচ্ছুই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত পরীক্ষার নামে বাণিজ্য ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছেন কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র অধ্যাপক সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, ফরমের উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে পরিকল্পিতভাবে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় শিক্ষার্থীর চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের লাভকেই বড় করে দেখেছে। তিনি বলেন, ‘ফরমের মূল্য অবশ্যই সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত।’

মেহেরচন্ডী এলাকার ভর্তীচ্ছু রাসেল বলেন, ‘একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য ভর্তীচ্ছুদের বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ হয়ে যায়। আর এই টাকা জোগাড়ের জন্য অনেক পরিবারকেই হিমশিম খেতে হয়।’

রবিন নামের আরেক ভর্তীচ্ছু বলেন, ‘অস্বচ্ছল ভর্তীচ্ছুদের কথা বিবেচনায় রেখে ভর্তি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা উচিত ছিল। এ ছাড়াও ইউনিটের সীমাবদ্ধতা ভর্তীচ্ছুদের মানসিকভাবে দুর্বল করে দেবে।’

এ বিষয়ে জানতে ভর্তি কমিটির সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

তবে ভর্তি কমিটির সদস্য ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ফরমের মূল্য বাড়ানো হয়নি। একাধিক ইউনিটে পরীক্ষা দিতে যে খরচ হত একটি ইউটিনে পরীক্ষা দিতেও সেই খরচই হবে। ইউনিট কমিয়ে আনার ফলে ফরমের মূল্য বেশি মনে হচ্ছে।

এদিকে, ফরমের মূল্য কমানোর দাবিতে আজ (২৫ জুলাই) বিকেলে উপাচার্য বরাবর রাবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। উপাচার্যের পক্ষে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।

স/অ