রাবির বাসের সময়সূচি পরিবর্তন: ভোগান্তির শিকার হবে শিক্ষার্থীরা

রেদওয়ানুল হক বিজয়, রাবি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পরিবর্তিত ক্লাস ও অফিস সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিবহন ব্যবস্থার সময়সূচিও পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিবর্তিত এই সিদ্ধান্ত আগামীকাল (১৬ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে প্রতিদিন ৭টি শিফটে বাস চলাচল করলেও পরিবতির্ত সময়সূচির পর তা কমে হয়েছে ৪টিতে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, সকাল ৮টা ৫ মিনিট, ৯টা, দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট ও বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে ছাত্র-ছাত্রীদের বাসগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাড়িকেলবাড়িয়া কৃষি ইউনিটের জন্য সকাল ৮টা ৫মিনিট, সকাল ৯টা ৫ মিনিট ও ১টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ সকাল ৮টা ৫ মিনিট ও বিকেল ৫টা ১০ ও ৫টা ১৫ মিনিটের বাসে যাতায়াত করতে পারবেন।

অন্যদিকে, ক্যাম্পাস থেকে ৮টা ৫ মিনিটে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো পদ্মা আবাসিক, বিহাস, সমসাদিপুর, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট, বল্লবগঞ্জ, বর্ণালী ও কোর্ট, সিএন্ডবি, কাসিয়াডাঙ্গা, বিজিবি, নওদাপাড়া অলোকার মোড়, নওহাটা, মাহেদ্রা, বানেশ্বর থেকে সাড়ে ৮টায় ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।

একই গন্তব্য থেকে সকাল ৯টা ৫মিনিটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাসগুলো সাড়ে ৯টা এবং দুুপুর পৌনে ২টার বাসগুলো ২টা ১০ মিনিটে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের বাসগুলো ৫টা ৩৫ মিনিটে এবং ৫টা ১৫ মিনিটের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাগণদের বাসগুলো ৫টা ৪০ মিনিটে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।

তবে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, দুপুরের বাসেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস থেকে বাসায় যায়। দুপুর ১২টা ১০ মিনিট থেকে ২ টা ১০ মিনেটে তিনটা বাস থাকলেও বাসের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় দাঁড়িয়ে যেতে হয়। এরপর যদি দুপুরে মাত্র একটা বাস দেয়া হয় তাহলে তাদের বাসে করে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি বাসে করে প্রতিদিন বাজার থেকে ক্যাম্পাসে আসি। আর বেশির ভাগ সময় দাঁড়িয়ে আসতে হয়। এমনিতেই বাসের সংখ্যা কম। তার ওপর আবার নতুন সূচি অনুযায়ী বাস চলাচল করলে আমাদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।’

শরিফুল সোহাগ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি নওহাটা থেকে প্রতিদিন বাসে করে ক্যাম্পাসে আসি। আমাদের নতুন ক্লাস রুটিন ও বাসের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সপ্তাহে দু’দিন বাসে করে আসতে পারবো। আর বাকি দিনগুলোতে আমাদের নিজেদের খরচে ক্যাম্পাসে আসতে হবে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মোহা. মাইনুল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস ও অফিসের যে সময়সূচি নির্ধারণ করেছে সেই নিয়ম অনুযায়ী বাস চালাচলের সময় সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ নিয়ে গঠিত পরিবহন উপদেষ্ঠা কমিটি নতুন এ সময়সূচি ঠিক করেছে। এখন যেহেতু ক্লাস নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত তাই সেদিকটি বিবেচনা করেই এ সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। পুরাতন সময়সূচিতে দুপুরে তিন সময়ে বাস চলাচল করতো। নতুন সময়সূচিতে দুপুরে শিক্ষার্থীদের ছুটি হবে না। তাই শুধুমাত্র এক সময়েই (১টা ৪৫ মিনিট) বাস চলবে। আর বিকেল পাঁচটায় ছুটির সময়ে যদি শিক্ষার্থীদের বাসে জায়গা না হয়, তাহলে পরবর্তীতে আমরা ওই লাইনে আরও বাস যুক্ত করব।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সকালে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসার জন্য দুই বার বাস চলাচল করবে। দুপুরে একবার ও বিকেলে একবার। দুপুরের বিরতিতে অফিসারদের জন্য কোনো বাস রাখা হয়নি যেন একবারে অফিস সেরে যেতে পারে। তাই অফিসারদের আসার জন্য বাস একবারই। পরীক্ষামূলক নতুন এ সময়সূচি করা হয়েছে। এগুলো নতুন অফিস সূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। তবে যদি দেখা যায় শিক্ষার্থীদের নতুন সময়সূচিতে সমস্যা হচ্ছে, সিট সংকুলান হচ্ছে না তাহলে পরিবহন উপদেষ্টা কমিটি এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে।’
প্রসঙ্গত, নতুন সময়সূচি অনুযায়ী শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে। আগামী ১৬ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসের নতুন এ সময়সূচি কার্যকর করা হবে। পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম।

স/বি