রাণীনগরে টাকার বিনিময়ে ধর্ষণচেষ্টাকারীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর রাণীনগরে রাতের আঁধারে এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে গ্রামের কতিপয় মাতব্বর ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রানীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রাম দোগাছী পাড়ায়।
গ্রাম্য মাতব্বর ও চেয়ারম্যানের কাছে সুবিচার না পাওয়ায় ভুক্তভোগী শুক্রবার ধর্ষণ চেষ্টাকারী বিশুকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী লায়লা বানু (ছদ্মনাম) অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমার স্বামী জীবিকার তাগিদে প্রায় ৫ বছর যাবত বিদেশে রয়েছে। আমার এক মেয়ে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে আর একটি ছেলে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন যাবত একই গ্রামের হিন্দুপাড়ার হারান সরকারের ছেলে বিশু সরকার আমাকে কুপ্রস্তাব এবং নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। এর আগেও সে আমার শ্লীতাহানীর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৯টার সময় ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় আমি তাকে কৌশলে ঘরের বাহিরে এসে দরজা বন্ধ করে চিৎকার করলে আশেপাশের মানুষ ও গ্রামের কতিপয় মাতব্বর এসে সকালে বিচার হবে বলে তাকে ছেড়ে দেয়।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, সুবিচার পাওয়ার আশায় বিষয়টি আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। কিন্তু বেশ কদিন পার হলেও আজ পর্যন্ত আমি কোন সুবিচার পাইনি। আজ-কাল বিচার হবে বলে চেয়ারম্যান ও মাতব্বররা কালক্ষেপন করছেন। আমি লোক মারফত জানতে পেরেছি যে, চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য গফুর, গ্রামের কতিপয় মাতব্বর নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গির, হেলাল, জব্বারসহ আরো অনেকেই বিষয়টি রফাদফা করার নামে বিষুর পরিবারের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে বিষয়টি রফাদফা করার জন্য আসেনি এবং কবে বিচার হবে সেই বিষয়েও কেউ কোনকিছু বলেনি।
ভুক্তভোগী আরো বলেন, শুক্রবার থানায় গিয়ে একটি মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ এখনও কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি। আমি জানি না পুলিশের কাছে সুষ্ঠু বিচার পাবো কি না?
অপরদিকে ঘটনার পর থেকে ধর্ষণে চেষ্টাকারী বিশু সরকার পলাতক থাকার কারণে তার সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি কোথায় আছেন তাও বলতে পারেননি বিশুুর পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবুল বলেন, গ্রামের মাতব্বররা বিষয়টি মিটমাট করেছেন।
রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমিও অর্থের মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাট করার ব্যাপারে লোক মারফত জেনেছি। ভুক্তভোগী ধর্ষণে চেষ্টাকারী বিশুকে প্রধান আসামী ও গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমি অতি দ্রুত বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
স/শা