রাজশাহী সিভিল সার্জনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ১০ বছর ধরে ঢাকায়, সম্পদের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত প্রায় ১০ বছর ধরে সংযুক্তিতে চাকরি করছেন ঢাকায় স্বাস্থ্য বিভাগে। অথচ তাঁর পদায়ন রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি সিভিল সার্জন দপ্তরের পদটি ধরে রাখার কারণে তাঁর স্থলে অন্য কেউ আস্তেও পারছেন না। স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতিবাজ যে ৪৫ কর্মকর্তা-কর্মচারিকে দুদক চিঠি দিয়েছে তঁাঁর মধ্যে এই কাফিও রয়েছেন। সেখানে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তিনি কাগজে-কলমে এখনো রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনকি কর্মকর্তা পদে রয়েছেন। আর সেই তিনি হলেন স্বাস্থ্য বিভাগে বিল্ডিং কাফি নামে পরিচিতত আব্দুল্লাহ হেল কাফি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ হেল কাফি চাকরির পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের ভবন নির্মাণের ঠিাকাদারী কাজের পুরো নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে তাঁকে সবাই বিল্ডিং কাফি নামেই চেনেন।
তিনি বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগের ৫টি হাসপাতাল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্তিতে রয়েছেন ঢাকায়। ফলে যেখানেই হাসপাতালের নতুন নতুন ভবন বা নির্মাণকাজ হয়, সেখানেই কাফিকে সংযুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নের সময়ে তাঁকে সেখানে সংযুক্তিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিলো। এখানে থাকা অবস্থায় দুদকের নজরদারিতে আসেন তিনি।

গত জানুয়ারিতে দেশজুড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের যে ১৫০ জন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম বেরিয়ে আসে, তার মধ্যে কাফি ছিলেন অন্যতম। কিন্তু বরাবরের মতেই চতুর কাফি থেকে গেছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
সবশেষ ৪৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উঠে আসে তাঁদেরর মধ্যেও রয়েছে কাফির নাম। নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বাসিন্দা এই কাফির রয়েছে অঢেল সম্পদ।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, রাজশাহী নগরীর উপশহরে রয়েছে তার একটি বিশালাকার জমি। যার আনুমানিক মূল্য অন্তত ৪ কোটি টাকা। কায়সার মেমোরিয়ালের সামনে পাশাপাশি দুটি ১০ তলা ভবনের মাঝখানের এই জমিটি বছর কয়েক আগে কেনেন তিনি। সেখানেও গড়ে তোলা হবে দশ তলা ভবন। রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন কাফি। কিন্তু গত প্রায় ১০ বছর তিনি ঢাকায় চাকরি করেন সংযুক্তিতে। তাঁর দাপটে অন্য কোনো কর্মকর্তাকে এখানে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। আবার ররাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের টেন্ডারসহ বিভিন্ন কেনাকাটা এখনো ঢাকায় বসে নিয়ন্ত্রণ করেন কাফি।’

তবে তিনি কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান আব্দুল্লাহেল কাফি। তিনি এও বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রেশনে ঢাকায় রয়েছি। কোনো অন্যায় কিছু করিনি। কিন্তু আমার পদে যারা যেতে চাই, তারা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

এদিকে রাজশাহী নার্সিং কলেজের প্রধান সহকারী গোলাম মোস্তফা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইব্রাহীমের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁেক বদলি করাও হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তিতে তিনি আবার একই পদে থেকে যান।

একই প্রতিষ্টানের আরেক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইব্রাহীম হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ। চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারীর দাপটে তটোস্থ গোটা নার্সিং কলেজ। এছাড়াও তাঁর পরিবারের অন্তত ৮ জনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন ইব্রাহীম। পাশাপাশি নাসির্ং ইন্সটিটিউটে ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদেরর পাহাড় গড়ে তোলারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদক রাজশাহীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতিবাজদের নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তাদের সম্পদেরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

স/আর